ফরিদপুর মেডিকেলে আইসিইউর চিকিৎসকের পদ শূন্য

ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৬ শয্যার ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) চিকিৎসকসহ প্রথম শ্রেণির সব কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে।

শেখ মফিজুর রহমান শিপন ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2021, 12:49 PM
Updated : 30 July 2021, 12:49 PM

২০১৬ সালে স্থাপিত এই আইসিইউতে এখনও জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে হাসপাতালের একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন রোস্টার মেডিকেল অফিসার দিয়ে করোনা রোগীদের জন্য ইউনিটটি চালু রাখা হয়েছে।  

নির্দিষ্ট জনবল না থাকায় এখানে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে আইসিইউতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে একজন সহকারী অধ্যাপক, দুইজন জুনিয়র কনসালটেন্ট, দুইজন সহকারী রেজিস্ট্রার ও দুইজন মেডিকেল অফিসার নিয়মানুযায়ী থাকার কথা। তবে প্রথম শ্রেণির এই সাতটি পদই এ যাবত শূন্য রয়েছে।

নির্ধারিত জনবল না থাকায় বর্তমানে হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অনন্ত কুমার বিশ্বাস অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এই আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জের কাজ সামলাচ্ছেন বলে জানান।

ফরিদপুর সুশাসনের জন্য নাগরিক (সনাক) সভাপতি ও নাগরিক মঞ্চের সহসভাপতি শিপ্রা গোস্বামী বলেন, এই হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগটি অত্যাধুনিক মানের। এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই, ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো নেইজাল ক্যানুলাসহ অত্যাধুনিক সুযোগসুবিধা রয়েছে।

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও গুরুতর রোগীদের এখানে আনা হয় উল্লেখ করে তিনি জরুরি ভিত্তিতে এই প্রতিষ্ঠানের আইসিইউ বিভাগে প্রয়োজনীয় জনবল দেওয়ার দাবি জানান।

কোভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ৫শ শয্যার এই হাসপাতাল পুরোটাই করোনা ডেডিকেটেড হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিদিন এখানে ৫শ করোনা রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ১৬ শয্যার এই আইসিইউতে প্রায় কখনও খালি শয্যা থাকে না।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬শ রোগী এই আইসিইউতে চিকিৎসা সেবা পেয়েছে। তার মধ্যে ২৭০ জন রোগী মারা গেছেন। আর আইসিইউতে বেড খালি না থাকায় ৪৮ জনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।

ডা. অনন্ত কুমার বিশ্বাস জানান, সারাদেশে ছয় হাজার মেডিকেল অফিসার নিয়োগ হলে সরকার সম্প্রতি চারজন মেডিকেল অফিসারকে এখানে নিয়োগ দিয়েছে। আর সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে উপজেলা পর্যায়ের চারজন মেডিকেল অফিসার কাজ করেন।

“এখানে যারা ডিউটি করেন তাদের নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পরে কোয়ারেন্টিনে যেতে হয়। এজন্য ইনচার্জের বাইরে একজন মাত্র রোস্টার (মেডিকেল অফিসার) দিয়েই কাজ চালাতে হয়। ফলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় রোগী ও চিকিৎসকদের।”

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুর রহমান বলেন, রোগীদের কথা বিবেচনা করে অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপককে দিয়ে হাসপাতালের আইসিইউ চালু রাখা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের সবকটি আইসিইউ সচল রয়েছে।

“জনবল না থাকা সত্ত্বেও আমরা সীমিত জনবল দিয়ে জীবন বাজি রেখে সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছি। এই ক্রান্তিকালে জনবল পদায়ন হলে আরও বেশি সেবা দিয়ে জনগণের জীবন রক্ষা করা যেত।”

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জনগোষ্ঠীর তুলনায় এই আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ‘খুবই অপ্রতুল’ উল্লেখ করে হাসপাতালের পরিচালক বলেন, “আরও আইসিইউ এবং জনবল থাকলে বহু মানুষের উপকার হতো। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।”