‘ঔরসজাত নয় সন্দেহে শিশুর গলাকেটে হত্যার স্বীকারোক্তি বাবার’

নিজের ঔরসজাত নয় সন্দেহে শিশুটির গলাকেটে হত্যার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন ওই বাবা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2021, 02:34 PM
Updated : 25 July 2021, 02:34 PM

রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আনোয়ার সাদাতের আদালাতে ওই বাবা জবানবন্দি দেন বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি এমরানুল ইসলাম জানিয়েছেন।

“মনের সন্দেহ থেকে বাবা বাদল মিয়া ঘাস কাটার কাঁচি দিয়ে নয় বছরের শিশুর গলাকেটে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।”

নিহত শিশু মো. সায়মান (৯) সদর উপজেলার সুহিলপুর গ্রামের নদ্দাপাড়ার মাদরাসাছাত্র ছিল।

ওসি জানান, ২০১২ সালে সৌদি আরব প্রবাসী বাদলের সঙ্গে সদর উপজেলার ভাদুঘর গ্রামের মিলি বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর পাঁচ মাস দেশেই ছিলেন বাদল।

তবে সৌদি আরবে ফিরে যাওয়ার পর জানতে পারেন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। এরপর এই সায়মনের জন্ম হয়। তবে বাদলের সন্দেহ ছিল সায়মন তার ছেলে না।

প্রবাসে যাওয়ার পর মিলির সঙ্গে এক হুজুরের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলেও সন্দেহ ছিল তার। এ সন্দেহ থেকে সায়মনকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা নেন বাদল।

গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাদল তার ছেলে সায়মন এবং ভাগিনা সিয়ামকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির পাশের বিলে ঘাস কাটতে যান। ঘণ্টা খানেক পর বাদল বাড়ি ফিরে গেলেও সায়মন ফেরেনি।

প্রথমে বাদল সায়মন তার আগেই বিল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা কথা বলেন। তবে খোঁজাখুঁজির পর বিল সংলগ্ন এক ধানক্ষেতে সায়মনের গলাকাটা মরদেহ পাওয়া যায়।

ওসি আরও বলেন, সৌদি আরব থেকে ছুটিতে নিয়মিত দেশে আসা-যাওয়া করতেন বাদল। সায়মন ছাড়াও বাদলের আরও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। ওই দুই সন্তানের সঙ্গে সায়মনের বনিবনা হতো না। এ নিয়ে বাদলের মনে আরও ক্ষোভ জমতে থাকে। সেজন্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘাস কাটার কথা বলে নিয়ে গিয়ে সায়মনকে বিলের পাশে ধানি জমিতে গলাকেটে হত্যা করেন তিনি।

হত্যকাণ্ডের পর বাদলের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় শনিবারই তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বাদল পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, তিনিই সায়মনকে গলাকেটে হত্যা করেছেন বলে জানান ওসি।

এ ঘটনায় বাদলের স্ত্রী মিলি বেগম সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছেন।