রোববার সকালে এই ঘটনা ঘটে বলে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
ফেরিটি ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরী হাট ঘাটে যাচ্ছিল। সেখান থেকে যাত্রীরা লক্ষ্মীপুর হয়ে ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করেন।
করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের মধ্যে ২৩ জুলাই থেকে আগামী ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সারা দেশে ‘কঠোর’ লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এই সময় সড়ক, ট্রেন, নৌ ও আকাশপথে সাধারণের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে ফেরিতে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি বহন করা যাবে।
নদীতে পড়ে যাওয়া তিন জনের মধ্যে রুবেল হোসেন নামের এক জনের নাম জানা গেছে।
রুবেল হোসেন বলেন, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। দুই দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিলেন। রোববারের মধ্যে ঢাকা পৌঁছাতে না পারলে তার চাকরি থাকবে না। জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলেন।
নদীতে পড়ে যাওয়ায় তার প্রয়োজনীয় জিনিস ও কাগজপত্র ভিজে গেছে বলে জানান রুবেল।
ভোলা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু আবদুল্লাহ খান বলেন, লকডাউনের মধ্যে ইলিশা ফেরিঘাটে সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ ছিল। তাদের বুঝিয়ে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করছিলেন।
“ঘাটে ফেরি আসার এক পর্যায়ে যাত্রীরা আমাদের বাধা অতিক্রম করে ফেরিতে উঠতে যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গতিরোধ করলে যাত্রীদের চাপে ঘাটের গ্যাংওয়ে থেকে তিন জন নদীতে পড়ে যায়। পরে স্থানীদের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়।”
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী বলেন, “ভোলার ফেরি ও লঞ্চঘাটে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি টিম, র্যাব, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও জেলা পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করছেন। বিদেশেগামী যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ফেরিতে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না।”
বিআইডব্লিউটিএ-এর দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারাও যাত্রী পারাপারে কঠোর অবস্থানে আছেন।
ইলিশা নৌ থানার ওসি মো. শাহ জালাল বলেন, কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিন (রোববার) ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ইলিশা ফেরিঘাটে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলাগামী যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল।
“ইলিশা ফেরিঘাটে আসা যাত্রীদের আমরা বুঝিয়ে বাড়ি ফেরত পাঠানোর জন্য চেষ্টা করছি; কিন্তু অনেক যাত্রী আমাদের বাধা উপেক্ষ করে ফেরিতে ওঠার চেষ্টা করছেন। দুপুরের দিকে প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে ফেরিতে উঠার সময় যাত্রীদের চাপে তিন যাত্রী গ্যাংওয়ে থেকে নদীতে পড়ে যান।”
পরে তারা স্থানীয়দের সহযোগিতায় নিরাপদে কূলে ওঠেন বলে তিনি জানান।