লকডাউন: চা বিক্রেতাকে জরিমানার বদলে খাবার সহায়তা

করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশব্যাপী লকডাউনের মধ্যে দোকান খোলা রাখায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় কয়েক ব্যক্তিকে জরিমানা না করে তাদের দুরবস্থার কথা শুনে খাবার সহায়তা দিয়েছেন স্থানীয় ইউএনও।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2021, 01:22 PM
Updated : 25 July 2021, 02:01 PM

শনিবার উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের কয়েকটি চায়ের দোকানে অভিযানকালে টুঙ্গিপাড়া ইউএনও এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম ব্যতিক্রমী এই ব্যবস্থা নেন।

করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের মধ্যে ২৩ জুলাই থেকে আগামী ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সারা দেশে ‘কঠোর’ লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।

১৪ দিনের এই লকডাউন বাস্তবায়নে সারা দেশে জেলা, উপজেলা ও মহানগরগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। জেল-জরিমানা করা হচ্ছে লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, চলতি লকডাউনের দ্বিতীয় দিন শনিবার রাত ৯টায় ইউএনও একেএম হেদায়েতুল ইসলাম পাটগাতী বাসস্ট্যান্ডে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে একটি চায়ের দোকান খোলা দেখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেদারুল ইসলাম ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সেখানে যান। 

ইউএনও এ সময় চায়ের দোকানদার আজিম শেখকে সাজার পরিবর্তে খাদ্য সামগ্রী উপহার দেন।

শুধু আজিম শেখই নন লকডাউন অমান্য করে দোকান খোলায় উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের অলিগলিতে আরও চারটি চায়ের দোকানে তিনি দণ্ডের পরিবর্তে খাদ্য সামগ্রী উপহার দেন।

এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় চায়ের দোকানদার আজিম শেখ বলেন, “পরিবার নিয়ে চলতে অনেক কষ্ট হয়। যদি ঘরে পর্যাপ্ত খাবার থাকত তাহলে তো লুকোচুরি করে দোকান খুলতাম না।”

পাটগাঁতী বাসস্ট্যান্ডে সন্ধ্যার পর একটু বেচাকেনা ভালো হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “তাই দোকান খুলেছিলাম। পরে ইউএনও স্যার দোকানে এসে জরিমানা করার বদলে খাদ্য সামগ্রী উপহার দেন ও দোকান খুলতে নিষেধ করেন। উপহারের খাদ্য দিয়ে কয়েকদিন চলে যাবে। তাই লকডাউনের মধ্যে দোকান বন্ধ রাখব।”

ইউএনও হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, “উপজেলার ইউনিয়নগুলোর অলিগলিতে চায়ের দোকানে আড্ডা হয় বলে অভিযোগ পেয়েছিলাম। তাই রাতে তদারকিতে বের হয়ে ওই চায়ের দোকানিদের কাছ থেকে খাদ্য সংকটের কথা জেনে তাদের জরিমানার পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা উপহার দেওয়া হয়।”

ইউএনও আরও বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়ন করতে উপজেলা প্রশাসন মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। তাই লকডাউন অমান্য করে কোনো চায়ের দোকান খুলে রেখে জনসমাগম করা চলবে না।

তিনি বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় প্রতিনিয়ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই করোনা মোকাবেলায় পূর্বেও চায়ের দোকানিদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে; আগামীতেও খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে।