মহামারীর মধ্যে সারা দেশে ঈদ

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সংক্রমণ এড়াতে বিধিনিষেধে আওতায় সারা দেশে মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাতে শরিক হয়েছেন মুসলমানরা। কোথাও কোথাও খোলা মাঠেও জামাত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2021, 10:07 AM
Updated : 21 July 2021, 10:07 AM

নামাজ শেষে মহামারীমুক্তির পাশাপাশি দেশ-জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন সবাই। প্রায় সবাই মুখে মাস্ক পরে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়েছেন।

নামাজ শেষে সারিবদ্ধভাবে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তারা একে অপরের সঙ্গে মুখে কুশলাদি বিনিময় করেন। পরিবারের বাইরের সদস্যদের সঙ্গে কোলাকুলির দৃশ্য ছিল বিরল।

বিডিনিউ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহে প্রধান জামাত হয়েছে কেন্দ্রীয় আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে।

সকাল ৮টার এই জামাতে গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, বিভাগীয় কমিশনার শফিকুর রেজা বিশ্বাসসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জামাতে নামাজে অংশ নেন।

নামাজ শেষে দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেছেন তারা।

বাগেরহাট

জেলার ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদে বাগেরহাটের প্রধান ঈদের জামাত।

বাগেরহাটের ডিসি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খন্দকার রিজাউল করিম, সদর উপজেলার ইউএনও মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলামসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন।

এই মসজিদে মোট তিনটি জামাত হয়।

সবাই মূখে মাস্ক পরে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কাতারে দাড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন সবাই। নামাজ শেষে সারিবদ্ধভাবে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তারা একে অপরের সঙ্গে মুখে কুশলাদি বিনিময় করলেও কোলাকুলি করেননি।

নামাজ শেষে মহামারী থেকে মুক্তি কামনা করে মোনাজাত করেছেন তারা।

নামাজ আদায় করতে আসা সবার জন্য এই মসজিদের প্রবেশ পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা ছিল।

জেলার ডিসি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনটি জামাতের ব্যবস্থা রাখা হয় এই মসজিদে।

“কোরবানির ঈদ ত্যাগের মহিমায় ভাস্মর। পশু কোরবানির সঙ্গে মনের পশুত্ব কোরবানি দিয়ে ভ্রাতৃত্ববোধে আবদ্ধ হয়ে জেলাবাসীর সেবায় নিয়োজিত থাকব।”

রাজশাহী

শাহমখদুম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জামাত অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকলেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় রাজশাহীর প্রধান জামাত হয়েছে হজরত শাহ মখদুম (র.) দরগা জামে মসজিদে।

সকাল ৮টার এই জামাতে ইমাম ছিলেন শাহ মখদুম (র.) মাদরাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহাদাত আলী।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে আসেন অধিকাংশ মানুষ। তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরে নামাজ আদায় করেন।

নামাজ শেষে মহামারী থেকে মুক্তি, দেশ-জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়েছে।

কুমিল্লা

জেলার অনেক মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করা হলেও অনেক মসজিদে সবাইকে মানতে দেখা যায়নি।

কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড় জামে মসজিদে হয়েছে জেলার প্রধান ঈদ জামাত। এতে ইমামতি করবেন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ঈদগাহর ইমাম মো. ইব্রাহীম ক্বাদেরী।

নামাজ শেষে মহামারী থেকে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের সব মানুষের সুরক্ষা, অসুস্থদের দ্রুত আরোগ্য লাভসহ দেশ ও জাতির সার্বিক বল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

জেলা জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টা ও সাড়ে ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এতে ইমামতি করেন হযরত সিবগাতুল্লাহ নূর। নামাজ শেষে মহামারী থেকে মুক্তিসহ দেশ-জাতির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

এছাড়া শহরের টেংকের পাড় জামে মসজিদ, সদর হাসপাতাল জামে মসজিদ, শেরপুর জামে মসজিদ, মদিনা মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে সকাল ৮টা থেকে একাধিক জামাতে নামাজ পড়েন মুসলমারা।

নামাজ শেষে মহামারীমুক্তি কামনায় মোনাজাত করেন মুসলমানরা। পরে পশু কোরবানি করা হয়।

জয়পুরহাট

সকাল ৭টায়  জেলার প্রধান ঈদ জামাত হয় জয়পুরহাট  কেন্দ্রীয়  ঈদগাহে। ইমামতি করেন  আব্দুল মতিন।

শিশু ও সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন জেলার ডিসি শরীফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা শাসক মনিরুজ্জামান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত হোসেন, জয়পুরহাট পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক।

একই স্থানে সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া  কালেক্টরেট ঈদগাহ, কাশিয়াবাড়ী ঈদগাহ, তালীমূল ইসলাম একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ, পুলিশ লাইন্স মাঠ, খনজনপুর খানকা শরীফ মসজিদ মাঠ, রামদেও বাজলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় আহলে হাদিস মসজিদ মাঠ , তেঁতুলতলী, হাতিল বুলুপাড়া  ও করিমনগর লালবাজার ঈদগাহে জামাতে ঈদের নামাজ পড়েছেন মুসলমানরা।

তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চিরচেনা রীতি ভেঙে এবার সবাই কোলাকুলি থেকে বিরত থাকেন।

ঈদ জামাতকে কেন্দ্র করে জেলায় নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিল।

ঈদের নামাজ শেষে আল্লাহর রহমত পেতে যে যার সাধ্যমত বাড়িতে ও সড়কের ওপর পশু কোরবানি দেন। পরে মাংস আত্মীয়-স্বজন ও গরিবদের দেন।