মাকে বাঁচাতে প্রাণ দিল প্রতিবন্ধী যুবক, প্রতিবেশী আটক

প্রতিবেশীর পিটুনি থেকে মাকে বাঁচাতে মারা গেলেন কুড়িগ্রাম সদরের এক প্রতিবন্ধী যুবক। এই ঘটনায় নিহতের এক প্রতিবেশীকে পুলিশ আটক করেছে।  

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2021, 12:34 PM
Updated : 14 July 2021, 12:35 PM

উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কাচিরচরে বুধবার এই ঘটনা ঘটে বলে সদর থানার ওসি খান মোহাম্মদ শাহরীয়ার জানান।

নিহত প্রতিবন্ধী জাহিদ হাসান (১৮) কাচিরচরের বাসিন্দা ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য ছলিমা বেগমের (৪৮) ছেলে।

নিহত প্রতিবন্ধী জাহিদ হাসান

হামলায় ছলিমা বেগম আহত হয়েছেন। তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

সদর থানার ওসি খান মোহাম্মদ শাহরীয়ার বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উৎপল কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হত্যা  মামলার প্রস্তুতি চলছে। লাশের ময়না তদন্ত করে স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হবে।

পুলিশ অভিযান চালিয়ে কাজল খান কাশেম নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বলেও জানান ওসি।

আহত ইউপি সদস্য ছলিমা বেগম বলেন, বুধবার সকাল ৭টার দিকে তার বাড়িতে ভিজিএফ-এর চাল নিতে এলাকার মহিলারা এসেছিলেন। ওই সময় তাদের কোলাহলে প্রতিবেশী কাজল খান কাশেমের ঘুম ভেঙে যায়।

পুলিশ ছলিমার প্রতিবেশী কাজল খান কাশেমকে আটক করেছে

“এই অযুহাতে কাজল বাড়ি থেকে কাঠ এনে আমাকে রাস্তার উপর পেটাতে থাকেন। আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আমার প্রতিবন্ধী ছেলে জাহিদ হাসান আমাকে জড়িয়ে ধরে বাঁচানোর চেষ্টা করে। এ সময় জাহিদকে এলোপাথাড়ি মারপিঠ করেন কাশেম।”

ছলিমা বলেন, “জাহিদ লুটিয়ে পড়ে এবং তার কান দিয়ে রক্ত বের হয়। সে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। আমারও মাথা ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। পরে প্রতিবেশীরা আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করে।”

কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন ছলিমা।

আহত ইউপি সদস্য ছলিমা বেগম

তার অভিযোগ, “কাশেমের সঙ্গে রাস্তা নিয়ে তার আগে থেকে বিরোধ ছিল। এই কারণে আমার অসুস্থ ছেলেটাকে পিটিয়ে হত্যা করল। আমি এর বিচার চাই।”

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক সরকার বলেন, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভর্তি হয় প্রতিবন্ধী জাহিদ হাসান। জাহিদের মাথায় বড় একটি টিউমার রয়েছে। টিউমারের উপরও আঘাত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার মাও ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১১টার দিকে জাহিদ মারা যান।

ছলিমা বেগম মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন; তিনি শঙ্কামুক্ত বলে জানান পুলক সরকার।