জয়পুরহাটে অনলাইনে সাড়া মেলেনি, ভরসা পশুর হাটে

কঠোর লকডাউনের মধ্যে জয়পুরহাটে অনলাইনে কোরবানির গরু-ছাগল বেচার চেষ্টা করেও কাঙ্খিত সাড়া না পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

মোমেন মুনি জেলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2021, 03:40 PM
Updated : 12 July 2021, 03:40 PM

এ জেলায় ঈদে বিক্রির জন্য ১২ হাজার খামারি ও গৃহস্থ পাবিবার মিলে প্রায় দেড় লাখ গরু, ৬৮ হাজার ছাগল এবং ২০ হাজার ভেড়া পালন করেছে বলে জানাচ্ছেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহফুজার রহমান।

জেলায় স্থায়ী ২১টিসহ কোরবানিতে ৩২টি পশুরহাট বসে জানিয়ে তিনি বলেন, যেগুলো লকডাউনের কারনে বন্ধ রয়েছে। এতে এই বিপুল বিনিয়োগের টাকা লোকসান গোনার শঙ্কায় পড়েছেন পশু চাষিরা।

করোনাকালীন পরিস্থিতিতে ‘কিছুটা হলেও পশু বিক্রিতে সংকট হবে’ উল্লেখ করে মাহফুজার বলেন, “এ সংকট মোকাবেলায় আমরা অনলাইন পদ্ধতিতে কেন-বেচার ব্যবস্থা করছি।”

খামরিরা জানান, গো-খাদ্য, ওষুধ ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় গরু পালনে খরচও বেড়েছে বহু। হাট বন্ধ থাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা গরু কিনতে আসছেন না। অনলাইনেও সাড়া মিলছে না ক্রেতাদের।

বাগিচা পাড়ার গরু পালনকারী ইদ্রিস আলী বলেন, “এবারে লকডাউন তো, তাই কম বেশি যাই হোক শেড থেকেই বেচা লাগবে, এছাড়া তো বুদ্ধি নাই। বাজারত তুললে এ্যানা বেশি দাম পানোহিনি কিন্তু কি করমো, আগের বছরের চেয়ে ২/৩ হাজার ট্যাকা কম হলেও বেচা লাগবেই।”

গনকবাড়ির খামারি শাদমান আলিফ মিম জয় বলেন, “বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে অনলাইন প্লাটফর্মেও বেচার চেষ্টা করছি কিন্তু এ মাধ্যমে ক্রেতাদের অনেকেই অভ্যস্ত নন। তেমন সাড়া পাচ্ছি না।”

সদরের সগুনা চারমাথা এলাকার খামারি সুমন মিয়াসহ অন্যান্য গরু-ছাগল পালনকারীরা জানান, খাদ্য, ওষুধ, পরিচর্যাসহ বাড়িতে পালন করা প্রতিটি দেশি গরুর পেছনে মাসে খরচ হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। আর বিদেশি জাতের গরুর জন্য খরচ দ্বিগুনেরও বেশি লাগে।

বর্তমানে দেশি জাতের গরু আকার ভেদে ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকার এবং বিদেশি জাতের গরু দেড় লাখ থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকার রয়েছে। বিক্রি না হলে গরুগুলো আবারো পালনের বাড়তি চাপে পড়বেন বলেছেন খামারিরা।

জেলায় ছাগল ও ভেড়ার বড় খামার না থাকলেও প্রতি গ্রামিই দরিদ্র ও কৃষক পরিবারগুলো কোরবানিকে সামনে রেখে ছাগল ও ভেড়া পালন করে থাকে। কোনভাবেই এসব মানুষ অনলাইনের আওতায় আসতে পারবে না বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

কালাই উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের বিধবা শাহেদা বিবি, সদর উপজেলার পাকুরতলী এলাকার অনোয়ার হোসেনসহ অনেক ছাগল-ভেড়া পালনকারী জানান, তারা মাঠে ছাগল-ভেড়া চরালেও প্রতি দিন ভূষি ও ঘাস কিনে খাওয়াতে হয়।

এ পরিস্থিতে কালাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন বলেন, উন্মুক্ত জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুরহাট বসানো গেলে লোক সমাগম কম হবে। এতে করোনার সংক্রমণ রোধের পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষই উপকৃত হবেন।

এদিকে সোমবার সরকার লকডাউনের মেয়াদ আগামী ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে বিধিনিষেধ শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে।