শনিবার রাতে এ ঘটনায় এক কিশোর বন্দি এবং পুলিশের এক এসআই আহত হয়েছেন।
প্রায় তিন ঘণ্টা পর রাত ১টার দিকে ডিসি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. রোকিবুজ্জামান জানান, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের বন্দিরা রাত পৌনে ১১টার দিকে বিভিন্ন দাবিতে ভাঙচুর শুরু করে। তারা ভবনের বিভিন্ন জানালার কাচ ভেঙে ফেলে এবং ভেতরে আগুন ধরায়।
এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গির আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বিলাল হোসেনের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য এবং কোতয়ালি থানার ওসি মো. তাজুল ইসলামও সেখানে ছিলেন।
ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তারা বিক্ষোভরত কিশোর বন্দিদের তিন প্রতিনিধিকে ডেকে নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
ওই তিন জন অভিযোগ করেন, তাদের ‘পেটভরে খেতে দেওয়া হয় না’। দুপুরে ‘হাফ প্লেট’ ভাত, রাতে ‘একটি রুটি’ দেওয়া হয়। তাতে তাদের ক্ষুধা মেটে না।
স্বজনরা এসে টাকা বা খাবার দিয়ে গেলে কেন্দ্রের কর্তব্যরতরা তা বন্দিদের না দিয়ে ‘আত্মসাৎ করেন’ বলেও তাদের অভিযোগ।
কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম পরে সাংবাদিকদের বলেন, “বন্দিদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
কিশোর বন্দিদের দাবি ও অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক অসিতকুমার সরকার বলেন, “তাদের অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক না। পুলিশ এসেছে। তারা বিষয়টি দেখছে।”
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক জাকির হোসেন বলেন, ‘গোলাযোগের মধ্যে’ একজন বন্দি আহত হওয়ায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তিনি ওই বন্দির নাম বলতে পারেননি।
রাত দেড়টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) কাজী সায়েমুজ্জামান কেন্দ্রের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন এবং বাইরে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তার আগেই বেরিয়ে যান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. তমিজুল ইসলাম খান।
সায়েমুজ্জামান বলেন, “দেড়শ জনের ধারণ ক্ষমতার এই কেন্দ্রে ২৪৮ জন বন্দি রয়েছে। বেশ কিছু দাবিতে তাদের অসন্তোষ রয়েছে। তাদের কথা শুনেছি। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি। তিন ঘণ্টা পর বিক্ষুব্ধ বন্দিদের শান্ত করা সম্ভব হয়েছে।”
“সেসব দাবিতে রাতে বন্দিরা বিক্ষোভ শুরু করে। কেন্দ্রের আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে যশোর জেলা পুলিশের দুই শতাধিক সদস্য অভিযান চালান।”
২০২০ সালের ১৩ অগাস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্যাতনে তিন বন্দি কিশোর নিহত এবং ১৫ জন আহত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছিল।
একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কমিটির অনেক সুপারিশই এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি।