লকডাউনের মধ্যে নীলফামারীতে গরু-ছাগল হাট

কঠোর লকডাউনের বিধি ভেঙে নীলফামারীর বিভিন্ন স্থানে বসছে গরুর হাট।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2021, 04:29 PM
Updated : 10 July 2021, 04:29 PM

শনিবার জেলার জলঢাকা উপজেলায় সকাল ৮টায় বসে হয় মীরগঞ্জে গরু-ছাগলের হাট। এ হাট চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। মীরগঞ্জ হাটে গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার ব্যাপক সমাগম হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার ডোমার উপজেলার গোমনাতি ইউনিয়নে বসানো হয় আমবাড়ি গরুর হাট। ঈদকে সমানে রেখে এসব গরুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

দুপুরে ১২টার দিকে ওই হাটে আসা তাজুল ইসলামের (৪২) সঙ্গে কথা হয়।

তিনি বলেন,“পরিবারের নিত্য কেনাকাটায় এক ঘণ্টা অবস্থান করেছিলাম সেখানে। গরুর হাটে দেখেছি মানুষ গিজগিজ করছে।”

বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক তো নেই, অন্যান্য স্বাস্থবিধি মানারও বালাই নেই। ছাগলের হাটেও ছিল একই অবস্থা বলেন তিনি।

হাটে আসা কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী জানান, ‘প্রশাসনকে ম্যানেজ করার’ কথা জানিয়ে এ হাটের ইজারাদার ফোন করে তাদেরকে ডেকে এনেছেন।

একইভাবে ক্রেতারা জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে হাট বসানোর প্রচারণায় তারা হাটে এসেছেন কোরবাণীর গরু-ছাগল কিনতে।

এ বিষয়ে মীরগঞ্জ হাটের ইজারাদার মনসুর আলী বলেন,“হাট বসানোর জন্য ডিসি অফিস থেকে আমরা কাগজ পেয়েছি। হাট বসানোর ক্ষেত্রে সেখানে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। আমরা সেগুলো পালন করে হাট বসিয়েছি। আজ থেকে হাট শুরু হয়েছে।”

মীরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির খান হুকুম আলী বলেন, “সপ্তাহে দুদিন শনিবার ও মঙ্গলবার এ হাট বসে। কঠোর লকডাউন শুরু হলে এর আগে প্রশাসন এসে হাট বন্ধ করে দেয়। আজকেও শুনছি হাট বসেছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে হাট বসানোটা তারা ঠিক করেননি।”

এদিকে সরকারি নির্দেশ অমান্য গত শুক্রবার ডোমার উপজেলার গোমনাতি ইউনিয়নে আমবাড়ীতে গরুর হাট বসানো হয়েছিল অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। অপরদিকে ওই উপজেলার চিলাহাটটিতেও ইজারাদারের বিরুদ্ধে মাইকিং করে হাট বসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আমবাড়ীতে গত শুক্রবার গরুর হাট বসার সত্যতা স্বীকার করেন গোমনাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন,“লকডাউনের কারণে উপজেলার প্রসিদ্ধ বসুনিয়ার হাট যেখানে বন্ধ আছে, সেখানে স্বাভাবিক নিয়মে আমবাড়ী হাট কীভাবে চলছে সেটি আমার জানা নেই।”

এ বিষয়ে জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন,“মীরগঞ্জে হাট বসানোর খবর পাওয়া মাত্র সেখানে সেনাবাহিনী পাঠিয়ে হাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। যারা দোকান খুলেছিলেন, তাদের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

সরকারি নিষেধ অমান্য করায় ইজারাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,“ইজারাদারকে নিষেধ করা হয়েছে। এরপরও যদি পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।”

জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, “লকডাউনের বিধি নিষেধ অনুযায়ী কোথাও গরুর হাট বসানো যাবে না। এরপরেও কোথাও গরুর হাট বসানোর অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে তাদের জরিমানা করা হচ্ছে।”