চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র নুরনবী এখন মাস্ক বিক্রেতা

রাস্তার পাশে ঝাপ ফেলা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে মাস্ক বিক্রি করছে দশ-এগার বছরের এক ছেলে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2021, 01:36 PM
Updated : 8 July 2021, 01:36 PM

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামে তার বাড়ি, তার নানা বাড়িও পাশাপাশি। বাগভান্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সে।

তার এক হাতে মাস্ক ভরা পলিথিন ব্যাগ আর অন্য হাতে প্লাস্টার। গত শনিবার গাছের ডাল থেকে পড়ে তার বাম হাত ভেঙে গেছে।

লকডাউনে নিরাপদে না থেকে কেন মাস্ক বিক্রি করছে জানতে চাইলে নুরনবীর কণ্ঠে উঠে আসে তার কষ্টের কাহিনী।

মাস দুই আগে রিকশাভ্যান চালক তার বাবা অছিম উদ্দিন অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। মা সোনাভান বেগম মানসিক ভারসাম্যহীন। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। বোনদের মধ্যে দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।

মহামারীতে স্কুল বন্ধ থাকায় পরিবারের খরচ মেটাতে বড়দের যোগালি হিসেবে কাজ করত সে। পাশাপাশি জাম পেড়ে বাজারে বিক্রি করত। গাছ থেকে পড়ে হাত ভেঙে যাওয়ায় সেই সুযোগটিও তার আর নেই।

শিশু নুরনবী জানায়, শ্রমিক নানী বিবিজন বেগম ডাক্তারের কাছে নিয়ে হাত প্লাস্টার করিয়ে এনেছেন।

‘ওষুধ কেনার টাকা নাই’ তাই চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে মাস্ক বিক্রি করে নুরনবী।

তার বাবা-মাসহ পারিবারিক অবস্থা নিশ্চিত করেন বাগভান্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউল আলম।

এ প্রধান শিক্ষক বলেন, “বাবা মারা যাওয়ার পর নুরনবীরা দুই ভাই তার নানীর কাছে থাকে। নুরনবীর নানী বিবিজন খুব গরিব।”

নুরনবীর হাত ভাঙার খবর তিনি জানতেন না।

এ বিষয়ে কথা হয় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জামাল হোসেনের সঙ্গে।

নূরনবীর বিষয়ে জানতে পেরে জামাল হোসেন বলেন, তাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। আর তার মা যদি সরকারি ভাতা না পেয়ে থাকেন, তাহলে তাকে বিধবা অথবা প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হবে।