বুধবার জেলার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৮০১টি নমুনা পরীক্ষায় ২৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের বেশি।
এ সময়ের মধ্যে ১৩ জন করোনা রোগী মারা গেছে এবং তিন জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে বলে তিনি জানান।
জেলার ছয়টি উজেলায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের দেওয়া তথ্যমতে, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু সংখ্যার সঙ্গে অন্তত আরও ৪০ শতাংশ উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এগুলি সবই তালিকার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
কুমারখালী উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আকুল উদ্দিন বলেন, তালিকা বহির্ভূত অনেক রোগী করোনা উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে মারা যাচ্ছে। যে দুয়েকজন হাসপাতালে আসছেন তাদের পরীক্ষা করলে পজেটিভ মিলছে। অর্থাৎ সময়মতো পরীক্ষা না করা বা হাসপাতালে না আসার কারণে গ্রামীণ এলাকায় ওরা সংক্রমণ ছড়িয়ে দিচ্ছে।
দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদ আনসারী বিপ্লব বলেন, করোনা আক্রান্ত হলেই তার বাড়ি লাল কাপড় দিয়ে লকডাউন, আশপাশের লোকজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া, অন্যরা বাঁকা নজরে দেখা ইত্যাদি নানা কারণে আক্রান্তরা মুখ খুলছে না, অবাধে চলাফেরা করছে। এতে মানুষই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি কেউ মারা গেলে তার মৃত্যুর কারণ জানাচ্ছে না স্বজনরা।
কোভিড ডেডিকেটেড ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোমেন জানান, “মৃত্যু হওয়া সবগুলি রোগীই গ্রামাঞ্চল থেকে আসছে এবং তাদের অক্সিজেন লেভেল এতই নিম্নস্তরে পাচ্ছি যে হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসকরা সবরকম চিকিৎসা দেওয়ার পরও তাদের রক্ষা করা যাচ্ছে না।”
এতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।
করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্বরত কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. সালেক মাসুদ বলেন, যেসব রোগী বাড়িতে থেকে সময়মতো হাসপাতালে আসছে না; আর অক্সিজেন লেভেল বেশি নিচে নেমে যাওয়ার পর যারা আসছে তাদের হাই ফ্লো নেইজাল ক্যানুলায় অক্সিজেন দিয়েও রিকভার করানো যাচ্ছে না।
বর্তমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন শতাধিক রোগীর মধ্যে অন্তত ৪০ শতাংশ রোগীর অক্সিজেন লেভেল ৫০ থেকে ৮০-এর নিচে বলে জানান তিনি।