কক্সবাজারে দুই শিশুকে খাঁচায় আটকে নির্যাতন, একজন গ্রেপ্তার

কক্সবাজারে চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে ‘মুরগির খাঁচায় আটকে রেখে ইলেকট্রিক শক ও সিগারেটের ছ্যাকা’ দেওয়া অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2021, 06:40 PM
Updated : 6 July 2021, 06:45 PM

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের মোহাম্মদ শরীফপাড়ায় এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম।

গ্রেপ্তার আরমানুল করিম (২০) ঈদগড় ইউনিয়নের মোহাম্মদ শরীফপাড়ার নেজাম উদ্দিনের ছেলে।

নির্যাতনের শিকার মোহাম্মদ সোহেল (১০) ঈদগড় ইউনিয়নের মোহাম্মদ শরীফপাড়ার মো. নুরুল আলমের ছেলে এবং মোহাম্মদ ইব্রাহিম (১০) একই এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে।

এদের মধ্যে মোহাম্মদ সোহেল ‘নির্যাতনকারী’ রিফাত করিমের দোকানের কর্মচারী। রিফাত করিম ঈদগড় ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

গত ১ জুলাই দুপুরে রামু উপজেলার ঈদগড় বাজারের এক মুরগির দোকানে দুই শিশুকে নির্যাতনের ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ তা জানতে পারে।

পরে মঙ্গলবার সকালে ৫ জনকে আসামি করে নির্যাতনের শিকার শিশু মোহাম্মদ ইব্রাহিমের বাবা আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে রামু থানায় মামলা করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি গত কয়েকদিন আগে সংঘটিত হলেও পুলিশ অবহিত হয়েছে অনেক পরে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার এক শিশুর বাবা বাদী হয়ে মামলা করার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

এ ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ ভুট্টো বলেন, ঈদগড় বাজারে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা রিফাত করিমের মালিকাধীন একটি মুরগির দোকান রয়েছে। দোকানটিতে মোহাম্মদ সোহেল নামের এক শিশু বয়সী কর্মচারী ছিল।

ঘটনার দিন মুরগি দোকানে পার্শ্ববর্তী রাইচ মিলের কর্মচারী বন্ধু মোহাম্মদ ইব্রাহিমসহ দোকানে বসে সোহেল আড্ডা দিচ্ছিল। এক পর্যায়ে মালিক রিফাত করিম দোকানে এসে তাদের বিরুদ্ধে ‘১৫০ টাকা চুরির অভিযোগ তোলেন’। এ সময় দুই শিশুকে মারধর করার পাশাপাশি ‘হাতে-পায়ে ইলেকট্রিক শক ও জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাকা দেয়’। পরে তাদের মুরগির খাঁচায় বন্দি করে রাখে বলেন তিনি।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে শিশু ইব্রাহিমের রাইচ মিলের মালিকের ছেলে ঘটনাস্থলে নির্যাতনের কারণ জানতে চাইলে রিফাত করিম তাকেও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খাঁচায় বন্দি রেখে ওই দুই শিশুর উপর নির্যাতন চালানো হয়। সন্ধ্যার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।”

ফিরোজ জানান, খাঁচা থেকে মুক্ত করে দেওয়ার পর দুই শিশুর অভিভাবকরা উদ্ধার করে তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি নিয়ে যায়। পরে নির্যাতনের ভিডিও চিত্র ঘটনার পর কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, দুই ব্যক্তি দুই শিশুকে ধরাধরি করে এক দোকানের মুরগির খাঁচায় বন্দি করছে। এতে দুই শিশুর কান্নার শব্দ শোনা যায়। আর একজন কিছু একটা দিয়ে খাঁচার ভেতরে থাকা শিশু দুটিকে আঘাত করছে।

এ সময় সেখানে উপস্থিত লোকজন হাসাহাসি করার পাশাপাশি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় জিজ্ঞেস করছেন ‘মুরগি দুইটির’ দাম কত?