মঙ্গলবার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে দুই জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট ১৩৫ জন মারা গেছেন।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, টাঙ্গাইলে মঙ্গলবার মোট ৭১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪১৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় সর্বমোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০৪৪। এই হিসাবে শনাক্তের হার ৫৭.৯২ শতাংশ।
জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শফিকুল ইসলাম সজীব জানান, হাসপাতালটির করোনা ইউনিট, করোনা ওয়ার্ড ও আইসিইউ মিলে মোট ১১৬টি শয্যা রয়েছে। এর বিপরীতে হাসপাতালে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) রোগী ভর্তি রয়েছেন ১৪৩ জন।
“করোনার বেড সংখ্যা কম থাকায় এবং রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে সাময়িকভাবে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই হাসপাতালে করোনা বেডের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
ডা. সাদিকুর জানান, দুই দিন আগেও করোনা ইউনিটে রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৮ জন। আর এখন এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ১১৬ জন রোগীর জন্য বেড থাকলেও রোগী ভর্তি আছেন ১৪৩ জন। বেডের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় অনেক রোগীকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
সাদিকুর আরও বলেন, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসাপাতালটিতে মিড লেভেলের চিকিৎসক রয়েছেন ২০ জন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন ১৭ জন, নার্স রয়েছেন ৯০ জন।
করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে ইতোমধ্যে ২৬ জন নার্স ও ৩ চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলেও সাদিকুর রহমান জানান।
তবে বুধবার থেকে করোনা রোগীদের জন্য আরও ২৪টি বেড বাড়ানো হবে বলেও জানান এই তত্ত্বাবধায়ক।
স্থানীয় দুই সংসদ সদস্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তিনটি হাই ফ্লো নেইজাল ক্যানুলা দিয়েছেন। এই নিয়ে এই হাসপাতালে মোট ক্যানুলা হলো ১৩টি।
এই হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম সজীব জানান, গত রোববার টাঙ্গাইল-৫ আসনের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও টাঙ্গাইল-৬ আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটুর প্রতিনিধি হাসপাতালের কর্মকর্তাদের হাতে তিনটি হাই ফ্লো নেইজাল ক্যানুলা তুলে দেন।
এদিকে, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জ্বর ও ঠাণ্ডার উপসর্গে ভোগা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। সাধারণের মধ্যে নাপাসহ ঠাণ্ডা জ্বরের বিভিন্ন ওষুধের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন কয়েকজন ব্যবসায়ীরা।
শহরের খালিদ ড্রাগ হাউজের মালিক আনোয়ার হোসেন বাদল বলেন, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের চাহিদা বেড়ে গেছে। তারা প্রতিদিন ওষুধ কম্পানির লোকজনকে এসব ওষুধ সরবরাহ বাড়ানোর কথা বলছেন।