লকডাউনে বিক্রি নেই, দুধ নিয়ে সঙ্কটে চৌগাছার খামারিরা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউনের কারণে সবকিছু বন্ধ থাকায় দুধ বিক্রি করতে না পেরে সঙ্কটে পড়েছেন যশোরের চৌগাছায় খামারিরা।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2021, 07:33 AM
Updated : 6 July 2021, 08:03 AM

উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের তথ্য অনুযায়ী- চৌগাছাতে ছোট বড় মিলিয়ে অন্তত ৩০টি দুগ্ধ খামার রয়েছে। এ সব খামার থেকে যে দুধ সংগ্রহ হয় তা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়।

কিন্তু লকডাউনে সে পরিস্থিতি বদলেছে। এখন দুধ সংগ্রহ হলেও তা কিনছে না কেউ; বিক্রি না থাকায় চলছে না সংসার। ফলে শুধু মহামারীর আতঙ্ক নয়, খেয়েপড়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে টিকে থাকা যাবে কিনা, সে আতঙ্কেও পড়েছেন এ অঞ্চলের খামারিরা।  

উপজেলার সিংহঝুলী ইউনিয়নের বলিদাপাড়া গ্রামে খামারি ও স্কুলশিক্ষক প্রণব কুমার রায় বলেন, তার খামারে ২২টির মত গাভী আছে। এর মধ্যে ১৫ টি গাভী নিয়মিত দুধ দেয়। প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ লিটার দুধ হয়।

“লকডাউনের আগে প্রতি লিটার দুধ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হত। আগে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন গ্রামের ঘোষেরা দুধ নিতেন। এছাড়া ব্র্যাক থেকেও দুধ কেনা হত।

“এখন হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ। ঘোষেরাও দুধ কিনছে না। ফলে বেচাবিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে দুধ সংগ্রহ করে পুকুরের পানিতে ঢেলে ফেলতে হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “গত বছর করোনাভাইরাসের সময় লকডাউনেও এত ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়নি, কিন্তু এ বছর অনেক ক্ষতির মুখে পড়েতে হয়েছে। এখন খামারের ২২টি গাভী আর ১১টি বাছুরের প্রতি দিনের খাদ্য সংগ্রহে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে।”

উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের মোহন ও স্বপন কুমার জানান, খামার থেকে দুধ সংগ্রহ করে বিভিন্ন বাড়ি ও হোটেলে বিক্রি করে সংসার চালাতেন তারা। কিন্তু লকডাউনের কারণে এখন বাড়ি থেকেই বের হতে পারছেন না। আয় রোজগার না থাকায় বেশ কষ্টে পার হচ্ছে দিনগুলো।

উপজেলার ফতেপুর গ্রামের দুগ্ধ খামারি ইসমাইল হোসেন ও  স্বরুপপুর গ্রামের মিলন হোসেন জানালেন- দিন যত যাচ্ছে ততই অসহায় হয়ে পড়ছেন তারা।

চৌগাছা বাজারের আদি ঘোষ ডেইরির মালিক হরেন ঘোষ বলেন, “লকডাউনে হোটেল বন্ধ। তাই দুধ কেনাও আপাতত বন্ধ রয়েছে।”

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রভাষ চন্দ্র গোস্বামী বলেন, লকডাউনের কারণে উপজেলার দুগ্ধ খামারিরা দুধ বিক্রি করা নিয়ে বেশ সমস্যায় পড়েছেন। দুধ বিক্রি করতে না পেরে তারা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তা কাটিয়ে ওঠা বেশ কষ্টসাধ্য হবে।

তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে খামারিরা যাতে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে সেজন্য প্রাণী সম্পদ বিভাগ উদ্যোগ নেবে বলে তিনি জানান।