‘পাওনা টাকা আনতে গিয়ে’ হামলার শিকার নারী, মৃত্যু ২৩ দিন পর

কুষ্টিয়ায় পাওনা টাকা আনতে গিয়ে হামলার শিকার এক নারী তিন সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে হেরে গেছেন।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2021, 02:46 PM
Updated : 5 July 2021, 02:46 PM

প্রয়াত আয়শা সিদ্দিকা ঝড়া (৩০) কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।

রোববার রাত সাড়ে ১২টায় ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

কুষ্টিয়া শহরে গত ১১ জুন গভীর রাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন আয়শা সিদ্দিকা ঝরা।

ওই ঘটনায় ২১ জুন পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেছেন তার মা লিপি খাতুন। তবে এই মামলায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

আয়শার মা লিপি খাতুন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করছেন। তিনি সদর উপজেলার বিষ্ণুদিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম বুলুর স্ত্রী।

মামলায় লিপি খাতুন অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন [১১ জুন] সন্ধ্যায় পুলিশ লাইন সংলগ্ন পুনাক ফুড পার্কে পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য তাকে [বাদী লিপি] ও তার মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা ঝরাকে ডেকে নিয়ে যায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ। সেখানে গিয়ে দেখেন মিজানুর রহমান মিজু, আনিসুর রহমান বিকাশ, বিপুল আহমেদ ও জাকির হোসেনসহ আরও ২/৩ জন সেখানে উপস্থিত।

“পূর্বকথামতো রাশেদ পাওনা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে এবং ঝড়ার সাথে ঝগড়া, তর্কাতর্কি ও কথাকাটাকাটিতে লিপ্ত হয়।”

এক পর্যায়ে তারা সেখান থেকে রাত সোয়া ১০টার দিকে বের হয়ে মিজানুর রহমান মিজু, আনিসুর রহমান বিকাশ, বিপুল আহমেদের একটি সাদা রংয়ের কারে উঠে বাসার উদ্দেশে যাত্রা করেন বলে মামলায় উল্লেখ করেন।

“বাসার সামনে পৌঁছামাত্রই চার জন লোক আমাদের উপর হামলা করে। হামলার সময় গাড়িতে বসে থাকা মিজু ও বিকাশ বাইরে বের হননি। হামলাকারীদের সাথে মিজু, বিকাশ, বিপুল ও রাশেদের যোগসাজসেই এই হামলা হয়েছে,” অভিযোগ লিপি খাতুনের।

আয়শা ঝরার চাচা আব্দুর রশিদ বলেন, ঘটনার পর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন জড়ো হওয়ায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়দের সাহায্যে গুরুতর জখম আয়শা সিদ্দিকা ঝরাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেই হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে ভর্তি করলেও পরে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, ১১ জুন রাত ১১টায় আয়শা সিদ্দিকা ঝড়া নামে এক নারী রক্তাক্ত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আসেন। তার পিছন দিক থেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দুই পায়ের লিগামেন্টসহ রক্তনালী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ওইদিন রাতেই তারা রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশে নিয়ে চলে যায়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক তাপস কুমার পাল বলেন, “তদন্ত শুরু করেছি; কিছু প্রাসঙ্গিক আলামতসহ ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলি বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা চলছে। আশা করি, খুব শীঘ্রই জড়িদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পারব।”

কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সাব্বিরুল ইসলাম বলেন, “গভীর রাতে শহরের হাউজিং এলাকায় নারীর উপর হামলা ও গুরুতর জখমের অভিযোগে করা মামলাটির তদন্ত চলছে। যারাই এঘটনায় জড়িত থাক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”