রংপুরে ‘সাড়ে ৪ হাজার’ পরিবার পানিবন্দি, নদীগর্ভে ৬ বাড়ি

উজান থেকে আসা ঢল আর কয়েকদিনের টানা বর্ষণে তিস্তার পানি বেড়ে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় অন্তত সাড়ে চার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

আফতাবুজ্জামান হিরু রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2021, 02:00 PM
Updated : 5 July 2021, 02:02 PM

বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা চরের ছয় পরিবারের বাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ, মর্নেয়া, গজঘন্টা ও গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হয়েছে।  

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু ,লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী, গজঘণ্টা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম, মর্মেয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন, আলম বিদিত ইউপি চেয়ারম্যান মোকারম হোসেন সুজনের সঙ্গে কথা বলেন।  

এই জনপ্রতিনিধিরা জানান, লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি, শংকরদহ, বাগেরহাট আশ্রয়ন, পূর্ব ইচলির ১ হাজার, কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, মটুকপুর, চিলাখাল, খলাইরচরসহ নিম্নাঞ্চলের ১ হাজার ৫শ, নোহালীর মিনার বাজার, কচুয়াচর, বৈরাতী বাঁধের ধার, চর নোহালী, বাগডহরা চরের ৫শ, মর্নেয়া ইউনিয়নের মর্নেয়াচর, তালপট্টি, আলাল চর, নরসিং চরের ৫শ, গজঘন্টা ইউনিয়নের কালির চর, ছালাপাক, গাউছিয়া বাজার, জয়দেব, মইশাসুর, রামদেব চরে ৫শসহ আলম বিদিত ও গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের তিস্তাবেষ্টিত নিম্নাঞ্চলের ৫শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সোববার [০৫ জুলাই] সরেজমিনে বাগেরহাট আশ্রয়ণের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

এই আশ্রয়ণের বাসিন্দা জরিনা, হালিমা, সুলতানা, মাজেদা, রুজিনা, সজিনা জানান, গত ৬/৭ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে অতিকষ্টে আছেন তারা। এখনও কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি।

কেল্লার পাড়ের মহির উদ্দিন বলেন, “কষ্ট হলেও পানিবন্দি হয়ে থাকা যায়, কিন্তু বাড়ি ভেঙে গেলে তারমত কষ্ট হয় না।”

তিনি নদীর ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

পশ্চিম ইচলির মতিবার, মালেক, বাবলু, আনোয়ার, জোবেদা বলেন, তিন দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। উঁচু স্থানে কোনো রকম রান্না এবং আত্বীয়ের দেওয়া খাবার এক বেলা করে খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

বিনবিনা চরের মনতাজ, আইয়ুব, মাহাম্মদ, মান্নান জানান, ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরও বাড়ি ও জমি বিলীন হয়ে যাবে।

লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তার ইউনিয়নের ১ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ভাঙন অব্যাহত আছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য দ্রুত ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন।

কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন দেখা দেওয়ায় বিনবিনা চরে ছয় পরিবারের বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে।

তিনি ভাঙন রোধসহ পানিবন্দিদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের দাবি জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলীমা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য ইতিমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানের অনুকূলে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।