‘এই বুঝি ঘরবাড়ি ভাঙ্গি পরে নদীত’

কয়েক দিনের বর্ষণে গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধিতে ভাঙনের মুখে আতঙ্কে তীরবাসী।

গাইবান্ধার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2021, 04:24 PM
Updated : 4 July 2021, 04:24 PM

ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়াভিটা গ্রামের গোলাপী বেগম (৫৫) বলেন, “সরা রাত চোখোত ঘুম আসে না ভয়ে। এই বুঝি ঘরবাড়ি ভাঙ্গি পরে নদীত। তারপরও হামার ঘোরের খোঁজ খবর নিবার কেউ আসে না।”

নদী ভাঙনে ২২ বার তার ঘরবাড়ি ভাঙার কথা তুলে তিনি বলেন, “এখন তো আর যাবার জায়গা নাই। এবার ভাঙলে যামু কই?”

রোববার গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, “পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় নদ-নদী সাধারণত ভাঙে। তবে জেলায় যে সব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে, সেসব এলাকায় প্রতিরক্ষামূলক কাজ করা হচ্ছে “

এ বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেল ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার তিনটি নদীর পানি বেড়েছে। এরমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে এবং করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালি পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনও বিপদ সীমার নিচে রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের খারজানি ও কুন্দেরপাড়া, ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়াভিটা, ভুষিরভিটা, রতনপুর এবং গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি, গলনা, জিয়াডাঙ্গা গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে ১৫টি বাড়ি বিলীন হয়েছে।

অপরদিকে যমুনা নদীর ভাঙনে সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের মুন্সিরহাট, গোবিন্দি, হাটবাড়ি গ্রামের ১০ ঘরবাড়ি এখন নদী গর্ভে। হুমকির মুখে মুন্সিরহাট, স্কুল ও বাজারসহ ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি।

কামারজানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম বলেন, প্রতিদিন ওই দুই গ্রামে চার-পাঁচ ফুট করে এলাকা ভেঙ্গে যাচ্ছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে অল্পদিনের মধ্যেই দুটি গ্রাম বিলীন হয়ে যাবে।

সাঘাটা ইউপি চেয়্যারম্যান মোশাররফ হোসেন সুইট জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর ভাঙনে এই ৩টি গ্রামের ১০টি ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। এছাড়া হুমকির মুখে পড়েছে মুন্সিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল ও হাটবাজারসহ ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি।

তবে পানি বৃদ্ধি পেলেও আপাতত বড় বন্যা হবার সম্ভাবনা দেখছে না গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড।