কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টিতে ডুবেছে সবজি ক্ষেত

টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ক্ষেতখামার প্লাবিত হয়েছে।

আহসান হাবীব নীলু কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2021, 03:40 PM
Updated : 4 July 2021, 03:40 PM

চাষিরা ‘৮০ ভাগ ফসল’ ঘরে তুলতে পেরেছেন। তবে জুনের শেষে উজানের ঢল ও বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে সবজিক্ষেত। এতে চাষিদের বাড়তি লাভের আশা জলে তলিয়েছে।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালন মঞ্জুরুল হক জানান, বন্যায় ক্ষতির কথা ভেবে জেলায় প্রায় ৮শ’ হেক্টর জমির পাট আগাম কাটা হয়েছে। এতে সামান্য কিছু ক্ষতির হবে। তবে পানিতে ডুবে যাওয়ায় সবজি ক্ষেতেরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

সদর উপজেলার ধরলা নদী তীরবর্তী পৌরসভা, হালোখানা, ভোগডাঙ্গা ও পাঁছগাছী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, নিম্নাঞ্চলের সবজি ক্ষেতগুলো জলমগ্ন হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সদর উপজেলায় প্রায় ৭০ হেক্টর ক্ষেতে সবজির গোড়ায় পানি উঠেছে। এতে পটল, শশা, মিষ্টি কুমড়া, মরিচের ক্ষতি হয়েছে। চাষিরা ৮০ ভাগ ফসল তুলতে পেরেছেন।

দুপুরে পাঁছগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজার এলাকার সবজি চাষিরা পানিতে ডোবা ক্ষেত থেকে সবজি তুলছিলেন।

এ এলাকার উত্তর নওয়াবশ, দক্ষিণ নওয়াবশ এবং ছড়ার পাড়ের অধিবাসী কাশেম, খলিল ও নুরুজ্জামান জানান, গত বছরের জুনের প্রথম সপ্তাহে বন্যায় সব ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছিল। এবার বন্যা না হলেও বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় নিচু ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। এতে ফসল নষ্ট হওয়ার পথে।

শুলকুর বাজারে ৩০ শতক পটল ক্ষেত তলিয়ে গেছে জব্বার আলীর। দুজন দিনমজুর নিয়ে সেই ক্ষেতের পটল তুলছিলেন তিনি।

জব্বার বললেন, “গতবার খুব লস হয়ে গেছে। এবার লাভের মুখ দেখার সময় বৃষ্টির পানি সব শেষ করি দিল। আর দুবার পটল তুলতে পারলে ভালো লাভ হতো। সেটা আর হলো না।”

দক্ষিণ নওয়াবশ গ্রামের চাষি খলিল জানান, প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ করি ২৫ শতক জমিতে চিচিঙ্গা আর চালকুমড়া লাগিয়েছিলেন।

“খরচ আমার উঠি গেইছে কিন্তু পানিটা আর কিছুদিন পরে আসলে আমাদের খুব উপকার হতো।”

এ গ্রামের কৃষক নাজমুল জানান, যারা উঁচু জমিতে সবজি চাষ করেছে তারা এবার খুব লাভবান হয়েছে। রোববার পানি কিছুটা কমেছে, এতে তারা খুব আশান্বিত।

ছড়ারপাড় গ্রামের কৃষাণি ছালেহা বেগম জানান, নিচু এলাকা হওয়ায় এখানে পাটক্ষেত তলিয়ে যাচ্ছিল। বাধ্য হয়ে পাট কাটতে হল। এতে মণে ৫ থেকে ৭ কেজি কম পাট পাবেন বললেন তিনি।

রোববার স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলার পানি ৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদ সীমার ৩৬ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদ সীমার ৮৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।