গাইবান্ধায় ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস’ পালিত

‘সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস’ উপলক্ষে গাইবান্ধায় বিভিন্ন কর্মসুচি পালিত হয়েছে।

গাইবান্ধার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2021, 12:32 PM
Updated : 30 June 2021, 12:32 PM

বুধবার সকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাঁটামোড় এলাকায় এবং দুপুরে শহরের গানাসাস মার্কেটের সামনে মানববন্ধন হয়েছে।

এর আগে সকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মাদারপুর গ্রামের সাঁওতাল পল্লী থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কাঁটামোড়ে আসেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও সাঁওতালরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত।

২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল পল্লীতে হামলা-অগ্নিসংযোগ লুটপাট এবং তিনজন সাঁওতালকে হত্যার বিচার দাবি করেন তারা। সেই সঙ্গে সাঁওতালদের বাপ-দাদার জমি ফেরত দেয়ার দাবিও জানান তারা।

১৯৬২ সালে সাঁওতাল ও বাঙালিদের এক হাজার ৮৪০ দশমিক ৩০ একর জমি অধিগ্রহণ করে আখের খামার গড়ে তোলে গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জস্থ রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ।

পরে চিনিকল কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণের শর্ত ভেঙে ওই জমি লিজ দেয়। এর প্রতিবাদে ২০১৫ সালে সাঁওতাল ও স্থানীয় কিছু বাঙালি অধিগ্রহণের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ তুলে পূর্বপুরুষের জমি ফেরতের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই ওই খামারের কিছু এলাকায় তারা চারটি বড় বসতি স্থাপন করে। ৬ নভেম্বর ওই খামারের বাকি জমিতে চাষ করা আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশসহ চিনিকল কর্মীদের সঙ্গে সাঁওতালদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।

এই আহতদের মধ্যে ৯ জন পুলিশ সদস্য তীরবিদ্ধ এবং চারজন সাঁওতাল গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে তিন সাঁওতাল শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ মারা যান।

পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই বসতি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে।

এসব ঘটনায় সাঁওতালদের পক্ষে স্বপন মুরমু বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর ৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে মামলা করেন।

সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, আদিবাসী ইউনিয়ন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জনউদ্যোগ’ যৌথভাবে এ দিবসের কর্মসূচি আয়োজন করে।

সাহেবগঞ্জে ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মিহির ঘোষ, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের জেলা আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম, সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্ত্তী, গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর কবীর, সাঁওতাল নেত্রী সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা, অলিভিয়া হেমব্রম, সুফল হেমব্রম, গণেশ মুর্মু, আদিবাসী নেতা ছোবান মুরমু, আন্দ্রিয়াজ, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) নেতা মৃণার কান্তি, সমাজসেবক জাফরুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী শহিদুল ইসলাম, অঞ্জলি রানী দেবী প্রমুখ।