মঙ্গলবার ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিজয় কুমার ব্রহ্ম বরাবর তিনি পদত্যাগপত্র দেন।
বিজয় কুমার ব্রহ্ম পদত্যাগপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ ও কর্মকর্তা সমিতির মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষই আমাদের কাছে লিখিত পত্র দেন।”
তিনি বলেন, প্রকৌশল দপ্তরের লিখিত পত্রে অফিসার সমিতির নেতাদের বিরুদ্ধে গত ১৫ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামকে তার কক্ষে গিয়ে লাঞ্ছিত করা, গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া ও পিকনিকের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারদের কাছ থেকে চাঁদাবজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়েছে।
“অভিযোগগুলি স্পর্শকাতর হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক কামরুজ্জামানকে আহবায়ক এবং আমাকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে,” বলেন বিজয় কুমার।
কমিটির অপর সদস্যরা হলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল আলম, ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ।
তদন্ত কমিটিকে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে; তদন্ত কমিটি কাজ করছে বলে বিজয় জানান।
সদ্য পদত্যাগ করা প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, “ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। কারো দাবির মুখে নয়।”
এর বেশি কিছু তিনি আর বলতে রাজি হননি।
প্রকৌশল দপ্তরের সেকশন অফিসার তৌফিকুর রহমান বলেন, “প্রধান প্রকৌশলী স্যারকে বিনা কারণে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। লুটপাটের অভিযোগ তুলে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে চাবি নিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্নভাবে তাকে অপমান অপদস্ত করার কারণেই তিনি নিজেকে সরিয়ে নিলেন।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “চলমান উন্নয়ন কাজের লুটপাটের বিষয়ে কর্মকর্তাদের অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়নি উপাচার্য অফিস। উল্টো প্রকৌশলীদের অভিযোগ আমলে নিয়ে আজ্ঞাবহ বিতর্কিত ও জিয়া পরিষদ নেতা দুর্নীতিবাজ এক শিক্ষককে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটি ১৫ দিনেও কোনো তদন্ত রিপোর্ট না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি হারুনর রশিদ ডন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের অর্থ অপচয় রোধ ও চলমান পাঁচশ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে নানা অনিয়ম এবং সেসব অনিয়মের বৈধতা দিতে ভুয়া বিল ভাউচারে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরে বাধ্য করার প্রতিবাদে আমরা প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের অব্যহতি চেয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবিতে কর্ণপাত করেনি। উপাচার্য রোস্তম আলী স্যার ঘটনার পর থেকে এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসেই আসেননি। অচলাবস্থা নিরসনে কোনো উদ্যোগও নেননি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা গত ২০ জুন থেকে কর্মবিরতি শুরু করি।”
অফিসার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহাগ হোসেন বলেন, “আমরা সব সময় চুক্তিভিত্তিক নিয়েগের বিপক্ষে। প্রধান প্রকৌশলী স্যার যেহেতু চুক্তিভিত্তিক তাই আমরা তার অপসারণ চেয়েছিলাম।”
এই বিষয়ে উপাচার্য এম রোস্তম আলীর মোবাইলে বিকাল ৫টার দিকে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।