সালিশ করতে গিয়ে বিয়ে: চেয়ারম্যানকে তালাক দিলেন কিশোরী

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সালিশ করতে গিয়ে নিজেই তাকে বিয়ে করে ফেলছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। পরদিনই তাকে তালক দিয়ে বাবার বাড়ি ফিরে গেছেন ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরী।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2021, 09:40 AM
Updated : 27 June 2021, 02:04 PM

কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার (৬০) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

মা-ভাই এবং প্রথম স্ত্রীর ‘অনুমতি নিয়ে’ ওই কিশোরীকে বিয়ে করেছিলেন দাবি করে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “সামর্থ্য থাকলে একজন পুরুষ মানুষ পাঁচটা বিয়েও করে।”

স্থানীয়রা জানান, ওই কিশোরী স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার প্রেমের টানে এক কিশোরের সঙ্গে বাড়ি ছাড়ে সে।

বিষয়টি জানার পর কিশোরীর বাবা চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ করলে তিনি সালিশ ডাকেন। শুক্রবার সেই সালিশে বসার পর মেয়েটিকে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। পরে তিনি ওই কিশোরীকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন।

বিষয়টি এলাকায় আলোচনার জন্ম দেয়। ওই কিশোরীর বাবাও ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিয়ে দেওয়া কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন।

তবে পরে, বিয়ে যিনি পড়িয়েছেন, তার মাধ্যমেই শনিবার চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে বাড়ি ফিরে যান সেই কিশোরী।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “চেয়ারম্যানের সালিশে গিয়েছিলাম পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে। কিন্তু বিয়ে করতে হয়েছে চেয়ারম্যানকে। আমি এক রাত চেয়ারম্যানের বাসায় থাকলেও কোনোভাবেই তাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারিনি। চেয়ারম্যান তা বুঝতে পেরে তালাক দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।”

বিয়ে ও তালাকের বিষয়ে প্রশ্ন করলে শাহীন হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সালিশে মেয়ের বাবা কোনোভাবেই মেয়ের পছন্দের ছেলের কাছে বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না। তাই তাদের সম্মতিতে কাজি ডেকে মেয়েটিকে বিয়ে করেছিলাম।

“যেহেতু মেয়ে বিয়েটা ভালোভাবে মেনে নিচ্ছিল না। তাই যিনি বিয়ে পড়িয়েছেন তার মাধ্যমে নিজের ইচ্ছায় মেয়েটি আমাকে তালাক দিয়েছে।”

এদিকে সালিশে প্রেমিকার সঙ্গে চেয়ারম্যানের বিয়ে হতে দেখে আত্মহত্যার চেষ্টা করে মেয়েটির ১৯ বছর বয়সী প্রেমিক। শুক্রবার রাতে তাকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।

গত ২১ জুন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান  নির্বাচিত হন শাহীন হাওলাদার। প্রথম স্ত্রীর সংসারে দুই সন্তান রয়েছে তার।