নারায়ণগঞ্জে নাশকতা: হেফাজত নেতা বশিরের স্বীকারোক্তি

হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে নারায়ণগঞ্জে চালানো নাশকতার দায় স্বীকার করে মুফতি বশির উল্লাহ্ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2021, 02:11 PM
Updated : 24 June 2021, 02:11 PM

বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ বদিউজ্জামানের আদালতে এ জবানবন্দী দেন তিনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বশির উল্লাহ্ নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, আদালতে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর মুফতি বশিরউল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, গত বুধবার পিবিআই কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুফতি বশির উল্লাহকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়। রিমান্ডে শেষে আদালতে ওই দিন তাণ্ডবের কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বশির।

তিনি আরও বলেন, “মুফতি বশির উল্লাহ হরতালে তাণ্ডব পরিচালনাকারী উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয় নেতাদের নাম প্রকাশ করে আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছেন। তিনি আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছেন। সেগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।”

সেদিন সাইনবোর্ড এলাকায় জালাও-পোড়াও ঘটনায় সিদ্বিরগঞ্জ থানায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০০ জন বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও হেফাজত কর্মীদের আসামি করে মামলা করে পুলিশ।

ওই মামলার তদন্ত ভার দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলাকে। পিআইবির কর্মকর্তারা অধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ্য ও গোপনে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলাটি তদন্ত করেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের প্রতিবাদে গত ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের সকাল-সন্ধ্যা হরতালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সাইনবোর্ডে যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং নাশকতার ঘটনা ঘটে।

এ হরতালে সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশ-হেফাজতের সংঘর্ষে দুই জন গুলিবিদ্ধ, পুলিশ-সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়। ১৮টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দুটি গণমাধ্যমের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্সসহ শতাধিক যানবাহন ভাংচুর করা হয়।

ওই দিন সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়ে অচল হয়ে পড়ে।

পরদিন রাতে পুলিশ বাদী হয়ে পাঁচটি এবং র‌্যাব বাদী হয়ে একটি মামলা করে। ওই ৬ মামলায় এজাহারনামীয় ১৪৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২৬শ’ জনকে আসামি করা হয়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সেই সংঘর্ষে নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ ৪ হাজার ২০০ রাউন্ড গুলি ও টিয়ারশেল ছোড়ে। এতে ৯ পুলিশ সদস্য আহত হয় বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়। পরে আরও তিনটি মামলা করেন ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির মালিকরা। এ নিয়ে মোট ৯টি মামলা চলমান রয়েছে।