কুমিল্লা-৫ উপনির্বাচনে রইলেন শুধু হাসেম খান

বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়ার এলাকা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের কুমিল্লা-৫ আসনে উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল হাসেম খান।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2021, 01:32 PM
Updated : 24 June 2021, 01:32 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্য্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক জানান, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীই এখন একমাত্র প্রার্থী, তা তিনি নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. জসিম উদ্দিন ‘ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে’ এ নির্বাচন থেকে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের আবেদন করায় আবুল হাসেম খানই একমাত্র প্রার্থী রইলেন বলেন তিনি।

“নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্ধিতা না থাকায় ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না।”

তফসিল অনুযায়ী এ আসনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ২৩ জুন। তার আগেই গত রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জসিম উদ্দিন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেন।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, প্রার্থীতা প্রতাহারের শেষদিনে যেহেতু একজন প্রার্থী রয়েছেন, সেটা আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলেই নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেব।

এ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এ দুইজনই। যাচাই-বাছাইয়ের পর দুইজনেরই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।

গত ১৪ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কুমিল্লা-৫আসনের সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক আইন মন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু।

তার মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর ২২ এপ্রিল এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২ জুন এ আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।

তফসিল ঘোষণার সময় উপ-নির্বাচনে ভোট গ্রহণের তারিখ ১৪ জুলাই নির্ধারণ করা হলেও দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় ভোট গ্রহণের তারিখ পুননির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন।

আগামী ২৮ জুলাই এ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

এদিকে, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় জেলা প্রশসাকের সাথে দেখা করার পর আবুল হাসেম খান বলেন, “আমি দলের তৃণমূল থেকে এ পর্যায়ে উঠে এসেছি। আমার কাছ থেকে কখনো নেতা-কর্মীরা বঞ্চিত হবে না।”

এছাড়াও তিনি বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া আসনের প্রয়াত নেতা আব্দুল মতিন খসরুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।

হাসেম খানের ৫৫ বছরের সাংগঠনিক জীবন

তারর জন্ম এ জেলার বুড়িচং উপজেলার সীমান্তবর্তী রাজাপুর ইউনিয়নের গিলাতলা (উত্তর) গ্রামে।

১৯৬৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রাথমিক সদস্য হন। এরপর টানা ৫৫ বছর এ ধারার সংগঠনে জড়িত রয়েছেন।

আবুল হাসেম ১৯৬৯ সালে ছাত্রনেতা হিসেবে গণঅভ্যূথ্থান, ’৭০ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আগরতলা মামলা এবং ’৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭২ সালে বুড়িচং রাজাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি, ’৭৬ সালে অবিভক্ত বুড়িচং থানা ছাত্রলীগের সভাপতি,’৮৩ সালে বুড়িচং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ৮৬ ও ৯৩ সালে এর দুদফা সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৩ ও ২০২০ সালে দুদফা এর সভাপতি ছিলেন।

১৯৮৬ সাল থেকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য রয়েছেন।

এছাড়া বিগত ১৯৮৬, ৯১, ৯৬, ২০০৮ এবং ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আব্দুল মতিন খসরুর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কনভেনার এবং চিফ এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শিক্ষা জীবন শেষে আইন পেশায় যোগ দেন তিনি। সাদাসিদে জীবনযাপনে অভ্যস্ত আবুল হাসেমের ‘আইন পেশার বাইরে কোনো আয়ের উৎস ছিল না’।