লক্ষ্মীপুরে পাপুলের আসনে ভোট চলছে

কুয়েতে দণ্ডিত কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের লক্ষ্মীপুর-২ আসনে উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2021, 06:18 AM
Updated : 21 June 2021, 06:18 AM

এ আসনের ১৩৬টি কেন্দ্রে সোমবার সকাল ৮টায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ শুরু হয়। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

রায়পুর ও লক্ষ্মীপুর সদরের একাংশ নিয়ে গঠিত এ আসনে ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ২ হাজার ৯৬৩ জন।

উপ-নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোফায়েল হোসেন বলেন, “ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে চলছে। অপ্রীতিকর যে কোনো ঘটনা রোধে আমরা সতর্ক রয়েছি। তবে ভোটারদের উপস্থিতি কেমন হবে তা বলা যাচ্ছে না।”

লক্ষ্মীপুরে বিএনপির অবস্থান আগে থেকেই শক্তিশালী হলেও এবারের উপ নির্বাচনে তারা প্রার্থী দেয়নি।

নিরুত্তাপ এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেখ মো. ফায়িজ উল্যা শিপন। তবে শিপনের লাঙ্গল নয়নের নৌকার সঙ্গে আদৌ কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারবে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন না।

রোববার সারাদিনই বৃষ্টি ছিল পুরো জেলায়। সোমবার ভোটের সকালেও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি চলছে। তবে এ মধ্যেও সকাল পৌনে ৮টার দিকেই সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের উত্তর টুমচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী ভোটারদের উপস্থিতি দেখা যায়।

এদিকে রামগতি উপজেলার তিনটি এবং কমলনগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে এদিন ভোটগ্রহণ চলছে।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল গত বছর ৬ জুন কুয়েতে মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয় কুয়েতের আদালত। পরে সাজা বাড়িয়ে ৭ বছর করা হয়।

কুয়েতের রায়ের নথি হাতে পাওয়ার পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে তার আসন শূণ্য ঘোষণা করা হয়। ১১ এপ্রিল ভোটের তারিখ রেখে তফসিল ঘোষণা হলেও করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় তা পিছিয়ে ২১ জুন নতুন তারিখ দেয় নির্বাচন কমিশন।

সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লক্ষ্মীপুরের এ আসনের সাংসদ হয়েছিলেন।

নির্বাচনে ওই আসনটি আওয়ামী লীগ তাদের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেষ মুহূর্তে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ পাপুলের পক্ষে কাজ করে। পরে জানা যায়, সেই ভোটে ছিল অনেক টাকার খেলা।

উপ নির্বাচনের তফসিল ও দ্বিতীয় দফা ভোটের তারিখ হওয়ার পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এবার নির্বাচনী এলাকার ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও কেন্দ্রভিত্তিক সভা, মতবিনিময় ও উঠান বৈঠক করেছেন। তবে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর প্রচার ছিল নামমাত্র।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাঙ্গলের প্রার্থী শেখ ফায়িজ উল্যাহ শিপন বলেন, “আমার নেতাকর্মীদের ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে। বিষয়টি আমি লিখিতভাবে প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমি নিরপেক্ষ ভোট চাই। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমি কাজ করেছি। জনগণ বিপুল ভোটের মাধ্যমে তাদের রায় দেবেন।”

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, “সরকারের উন্নয়নে সুফলভোগী হওয়ায় ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবেন। নৌকার পক্ষে ভোটারদের গণজোয়ার উঠেছে। অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার জন্য জনগণ নৌকায় ভোট দেবে।”

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, এ আসনে লক্ষ্মীপুর সদরের আটটি ইউনিয়ন, রায়পুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে।

ভোট সুষ্ঠু করতে ১৯ জন ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে পুলিশের পাশাপাশি ১০ প্লাটুন বিজিবি রয়েছে টহলে। এছাড়া র‌্যাব-১১ মোতায়েন রয়েছে নির্বাচনী এলাকায়।