ফরিদপুরে দুই সপ্তাহে মৃত্যু ১৬, তবু স্বাস্থ্যবিধি মানায় গাছাড়া

ফরিদপুরে টানা দুই সপ্তাহে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৬ জনের মৃত্যুর পরও জেলার হাট-বাজার-মার্কেটে লোকজনকে স্বাস্থবিধি না মেনে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।

শেখ মফিজুর রহমান শিপন ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 June 2021, 04:02 PM
Updated : 15 June 2021, 04:02 PM

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, এ জেলায় তাদের জুন মাসের শুরু থেকে প্রথম ১৪ দিনে কোভিড শনাক্তের হার উদ্ধমুখী দেখা গেছে। এ সময় জেলা সাতশ’র বেশি আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। আর প্রাণ হারিয়ে ১৬ ব্যক্তি।

বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে আইসিইউয়ের ব্যবস্থা রয়েছে শুধু ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ প্রতিষ্ঠানে ১৬টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে বর্তমানে সচল রয়েছে ১৪টি।

প্রতিদিনই রোগী আসলেও চাহিদা অনুযায়ী শয্যা না থাকায় ভর্তি নিতে পারছে না বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউয়ে প্রধান ডা. অনন্ত বিশ্বাস বলেন, “করোনা পরিস্থিতি গত দুই সপ্তাহ ধরে অবনতির দিকে রোগীর চাপ বাড়ছে অনেক, কিছু দিন আগেও ওয়ার্ডে রোগী ছিল ৩ থেকে ৪ জন, এখন সেখানে সিট ফাঁকা নেই।”

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মঙ্গলবার জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ফরিদপুরের কোভিট-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এক নারী। নতুন শনাক্ত হয়েছে ৯১ জন।

মঙ্গলবার দুপুরের ফরিদপুর শহরের নিউমার্কেট, হাজি শরীয়াতুল্লাহ বাজার, চকবাজারসহ উপজেলা পর্যায়ে বোয়ালমারী এবং আলফাডাঙ্গা সদরের মাকের্টগুলোতে সরকারি দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই দেখা যায়নি। সবাই দেরদারাছে চলা ফেলা করছে।

জানতে চাইলে ফরিদপুর পৌর বাসস্ট্যান্ড থেকে বোয়ালমারী ছেড়ে যাওয়া হাবিব পরিবহনের এক স্টাফ পাল্টা প্রশ্ন করেন, “পেট না চললে স্বাস্থ্যবিধি দিয়ে কি করব?”

তিনি বলেন, “পকেটে মাস্ক আছে। সরকারি লোক এলে সেটা মুখে পরি।”

ফরিদপুর নিউ মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অটোচালক খলিলুর রহমান বলেন, মাস্ক পরে থাকলে শব্দ করে যাত্রী ডাকা যায় না, তাই সব সময় মাস্ক পরা হয় না।

তবে মাস্ক পরা দরকার মনে করেন তিনি। চেষ্টাও করেন মাঝে মাঝে মাস্ক পরার।

ফরিদপুর সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, প্রথম দিকে আমাদের করোনা পরিস্থিতি বেশ ভালো ছিল কিন্তু দ্বিতীয় ধাপের চলতি সময়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।

জেলায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৯৪, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৪ এবং  সুস্থতার হার ৯৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ বলে জানান তিনি।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, সামাজকি দূরত্ব বাজায় রাখতে ইউনিয়ন পর্যায়ে গঠিত করোনা প্রতিরোধ কমিটির মাধ্যমে কাজ চলছে। এছাড়াও মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা হাট-বাজারগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন।