রবি ও সোমবার দুই দিনে জেলার ১১টি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৫৮০ জনের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়। তাতে ৮.০৮ শতাংশ মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে, যদিও তাদের বেশিরভাগ উপসর্গহীন ছিলেন।
নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. আবু হানিফ বলেন, নানা কারণে যারা করোনাভাইরাস পরীক্ষা করেননি, এরকম বিভিন্ন বয়সের পথচারী, যানবাহনের যাত্রী, ছাত্র/ছাত্রী, দিনমজুর, চা-পান দোকানীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে বিনা খরচে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করিয়েছিলেন তারা।
“পরীক্ষার ফলাফল দেধে মনে হয়, জেলায় আনসিন এবং উপসর্গ আছে এমন আক্রান্তের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩ থেকে ৫ শতাংশও হতে পারে।”
সীমান্ত জেলা নওগাঁয় ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছিল ঈদের পর থেকেই। দৈনিক শনাক্ত রোগী বাড়তে থাকায় ৩ থেকে ৯ জুন নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় লকডাউনের বিধিনিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন।
প্রায় ৩০ লাখ মানুষের এই জেলায় শনাক্তের বাইরে থেকে যাওয়া আক্রান্তের সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা পেতে স্বাস্থ্য বিভাগ রবি ও সোমবার নওগাঁ সদর সহ ১১ উপজেলায় একযোগে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালায়।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রোববার ১ হাজার ১০৮ জনের নমুনার অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ৯৫ জনের করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসে। তাতে শনাক্তের হার দাঁড়ায় ৮.৫৭ শতাংশ ।
একইভাবে সোমবার জেলায় ৪৭২ জনের অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ৩৪ জনের শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। তাতে শনাক্তের হার দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
সিভিল সার্জনের ধারণা ঠিক হলে ৩০ লাখ মানুষের জেলা নওগাঁর ৯০ হাজার থেকে দেড় লাখ মানুষ হয়ত ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন।
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. তারেক হোসেন বলেন, উপসর্গ আছে, অথচ বাড়িতে লকডাউনের ভয়ে পরীক্ষা করাচ্ছেন না বা গোপন করছেন- এমন ব্যক্তির সংখা কিন্তু কম নয়। তাছাড়া উপসর্গবিহীন আক্রান্তরাও আছেন।”
নওগাঁ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আব্দুল বারী বলেন, জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে কত শতাংশ আক্রান্ত, তার সঠিক সংখ্যা বড় পরিসরে পরীক্ষা না করে বলা মুশকিল। তবে দুই দিনের অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় যে চিত্র পাওয়া গেছে, তা উদ্বেগজনক।
সরকারি হিসাবে জেলায় এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে মোট ২ হাজার ৫৪০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাদের মধ্যে ৪৮ জন মারা গেছেন।