সম্প্রতি আতাইকুলা থানার বনগ্রাম ও দুবলিয়া হাটে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয় বলে আতাইকুলা থানার ওসি মো. জালাল উদ্দিন জানান।
রোববার জালাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বনগ্রাম ও আতাইকুলায় সিসি ক্যামেরার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুবলিয়া হাটে ১৬টি এবং বনগ্রামে ২৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। হাটের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
“আর ক্যামেরার কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে হাট সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়িতে যেখান থেকে সরাসরি বিশাল এ হাটের পুরো এলাকা মনিটর করছেন পুলিশ সদস্যরা।”
সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে বিশাল এই হাটের পুরোটাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকবে; ফলে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছাতে পারবে বলে ওসি জানান।
পর্যায়ক্রমে জেলার সকল হাটবাজারকে সিসিটিভ ক্যামেরার আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।
সরেজমিনে বনগ্রাম হাটে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে বিশাল এ হাটের কার্যক্রম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে এসেছে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করছেন।
বনগ্রাম হাটের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, প্রতি হাটবারে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ, পাটসহ নানা কৃষি পণ্য নিয়ে আসেন। তাঁত সমৃদ্ধ এলাকা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা লুঙ্গি, শাড়ি কিনতে আসেন। প্রতি সপ্তাহে হাটে প্রায় একশ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
“ব্যবসায়ীরা প্রায়ই চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের শিকার হন। জনবহুল এ হাটে অপরাধীদের শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় ব্যবসায়ীরা এখন আগের চেয়ে অনেক নিরাপদ।”
বনগ্রাম বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আল মামুন কবির রিপন বলেন, “তাদের হাটে প্রায় চার শতাধিক ব্যবসায়ী আছেন যাদের একটি বড় অংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের। এখানে কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই।
“অথচ বহিরাগত ও কিছু সুযোগ সন্ধানী অপরাধী এখানে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। অতীতে প্রমাণ না থাকায় আইনের ফাঁক গলে অনেকেই পার পেয়ে গেছে।”
এখন শুধু বনগ্রাম হাট নয় বরং পুরো বনগ্রাম এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকবে; ফলে অপরাধীরা অপরাধ ঘটানোর সাহস পাবে না বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তথ্য প্রযুক্তির সুবিধার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরার কার্যকারিতা পরীক্ষিত। জেলা পুলিশ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করে হাট ও বাজারগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। তাতে স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতাও মিলছে।
জেলার প্রতিটি উপজেলার হাট ও বাজারগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হলে জনবহুল এসব হাট-বাজারে অপরাধ কর্মকাণ্ড কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন।