‘অতিরিক্ত পেকে যাওয়া এবং পোকা ধরায়’ ক্রেতারা এই লিচু কিনতে আগ্রহ দেখাননি; তাই বাগানেই পচে নষ্ট হয়েছে সব লিচু।
পারিবারিক বিরোধের জেরে মামলা হওয়ায় ঈশ্বরদী থানা পুলিশ এই বাগানের লিচু পাড়তে নিষেধ করেছিল।
তবে পরবর্তীতে পাবনার পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে লিচু পাড়ার অনুমতি মিললেও তখন দেরি হয়ে গেছে। ওই লিচু আর কেনার লোক মেলেনি।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের এই লিচু গাছগুলো নিয়ে বিরোধ বাধে শামসুল হক প্রামানিক ও তার ভাই-বোনদের মধ্যে।
শামসুল হক প্রামানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০০০ সালে তাদের বাবার মৃত্যুর পর তারা তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে জমিজমা ভাগ-বাটোয়ারা হয়। এতে শামসুল হক প্রায় ৫৯ শতাংশ জমি ও কিছু লিচুর গাছ পান। সেই জমিতে তিনি আরও কিছু লিচুর গাছ রোপন করেন। প্রায় ২০ বছর ভোগ দখল করে থাকা ওই জমির ২২ শতাংশ জমি তিনি দুই জনের কাছে বিক্রি করেন। বাকি জমিতে শামসুল হকের বসত ভিটা ও ১৫টা লিচুর গাছ রয়েছে।
শামসুল হকের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর তিনি হামলার অভিযোগে তার ভাগ্নি হিমু (২৪), ভাতিজা শিশির (২৩), ভাই এনামুল হক (৬০) ও আসাদুল হকের (৫৮) বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
তিনি বলেন, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পরে জামিনে তারা বের হয়ে আসেন। এরপর শামসুল হককে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেন। এতে শামসুল হকের সঙ্গে আসামিদের আবার বিরোধ শুরু হয়।
“এর জেরে গত ২৫ মে আমি ঈশ্বরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। আসামিরাও একটি মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে থানায় একটি পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন।”
আসামিদের অভিযোগের কারণে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ গাছ থেকে লিচু পাড়তে নিষেধ করে বলে শামসুল হক জানান।
এতে শামসুল হক প্রামানিক (৫৫) প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন।
এ নিয়ে গত ৩০ মে ‘পুলিশের নিষেধে নষ্ট হচ্ছে ১৫ গাছের পাকা লিচু’ শিরোনামে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়।
পরে পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বাগানের লিচুগুলো বিক্রির জন্য সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেন।
এ ব্যাপারে সলিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বাবুল মালিথা বলেন, “পেকে লিচুতে পোকা ধরে গেছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশের পর আমরা লিচু বিক্রির জন্য কয়েকজন ক্রেতাকে বাগানে এনেছি। কিন্তু কিছুতেই তারা এই লিচু কিনতে রাজি হয়নি। এখন বাগানেই লিচুগুলো পচে ঝরে যাচ্ছে।”
ঈশ্বরদী থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “দুই পক্ষই বাগানের মালিকানা দাবি করছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছি। পুলিশ সুপারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।