বিক্রেতারা বলছেন, লকডাউনের শুরুতে ক্রেতারা বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল না। তিন-চার দিন ধরে অনেকে আম কেনার জন্য বাজারে আসছে। তাই বিক্রি কিছুটা বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলা শহরের পুরাতন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তিন-চারদিন আগের তুলনায় ক্রেতাদের ভিড় বেশি। বাজারে কয়েক দিন আগে গোপালভোগ ও কিছু গুটি জাতের আম থাকলেও এখন পাওয়া যাচ্ছে খিরসাপাতও।
শহরের মসজিদপাড়ার এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেন নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, তিনি সকালে ২০ মণ খিরসাপাত আম কিনেছেন এক বাগানমালিকের কাছ থেকে। সকল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ছয় মণ। গতকাল তিনি ২৫ মণ খিরসাপাত আম কিনে সারাদিনে সব বিক্রি করতে পেরেছিলেন।
ব্যবসায়রা বলছেন, অন্য বছরের তুলনায় ক্রেতা কম থাকায় দামও কম বিক্রিও হচ্ছে কম।
একই এলাকার নূর হোসেন ছোটকা নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, সকালে তিনি ৬০ মণ খিরসাপাত আম কিনেছেন। সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কিছুই বিক্রি করতে পারেননি।
তবে বুধবার ৮০ মণ খিরসাপাত ও ৩০ মণ গোপালভোগ কিনে সারাদিনে সবই বিক্রি করতে পেরেছিলেন বলে জানান।
তিনি বলেন, “আজ ক্রেতা কিছুটা কম। তাই বিক্রি হচ্ছে ধীরগতিতে। তবে আমি আশাবাদী সব আম সারাদিনে বিক্রি করতে পারব।”
গত তিন-চারদিন ধরে বিক্রি বেড়েছে বলে তিনি জানান।
জেলার বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এসব আম কিনে নিয়ে যায় বলে তারা জানান। তাছাড়া অনেকেই আত্মীয়বাড়ি বেড়াতে এসে আম কিনে নিয়ে যায়। তাদের সংখ্যাটা বেড় বড়। কিন্তু এবার লকডাউনের কারণে তারা না আসায় কম বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তারা।
পুরাতন বাজারের আড়তদার ও বাগানমালিক বাহরাম আলী বলেন, খিরসাপাত ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা আর গোপালভোগ ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে এবারের আম।
জেলার সবচেয়ে বড় আমের বাজার কানসাট। কানসাটে ইতিমধ্যে গত কয়েক দিন থেকে আম বিক্রি শুরু হয়েছে। এছাড়া জেলার অন্যতম বড় আমবাজার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ও শহরের পুরাতন বাজার। জেলায় রয়েছে আরও বেশ কিছু ছোট-বড় বাজার ও আড়ত।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, লকডাউনে আম বেচাকেনায় কোনো বাধা নেই। আম পরিবহনেও কোনো বাধা নেই। ব্যবসায়ীরা জেলার বাইরে আম নিয়ে যেতে পারবেন। বাইরের জেলা থেকেও এ জেলায় আম কিনতে আসতে পারবেন।
জেলায় এবার ৩৪ হাজার ৭৩৮ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, আর উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। গত বছরও প্রায় একই পরিমাণ উৎপাদন হয়েছিল এ জেলায়।