তিস্তায় তীব্র ভাঙন শুরু, বিলীন ঘর জমি গাছপালা

কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলা ঘেঁষে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2021, 01:42 PM
Updated : 1 June 2021, 01:42 PM

গত তিন দিন ধরে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার বজরা এবং গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের সীমানায় কাশিম বাজার লকিয়ার পাড় এলাকায় ভাঙন চলছে। এতে ‘অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, দোকান, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা এবং মুল্যবান শতাধিক গাছ নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে’।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যা শুরুর আগে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তিস্তা নদী তার ভয়াল রূপ দেখাতে শুরু করেছে।

নদীর ভাঙনে কাশিম বাজার হাট, নাজিমাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাশিম বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ সহস্রাধিক বাড়িঘর ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে।

ভাঙন কবলিত এলাকায় দেখা যায় ঘরবাড়িসহ আসবাবপত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলো। নদী থেকে দূরে কোনো রকমে থাকার মতো চালা ঘর তুলছেন তারা। থাকার ব্যবস্থা হলেও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ভাঙন কবলিতদের।

বৃষ্টির পানি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদী সংলগ্ন চরের জমির উঠতি ফসলসহ বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে। মূল্যবান গাছপালা কেটে সরিয়ে নেওয়ার সময়ও মিলছে না তাদের।

গত সোমবার নদীর ভাঙনে ৫টি আধাপাকা ঘর বিলীন হয়েছে বলছেন স্থানীয়রা।

বজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল আমিন বলেন, “আমার ইউনিয়ন এবং হরিপুর ইউনিয়নের সীমানায় তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। তিন দিনে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, দোকান, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা এবং মূল্যবান কয়েশ গাছ নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।

“দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ না করলে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।”

কাশিম বাজার হাট, নাজিমাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাশিম বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ সহস্রাধিক বাড়িঘর ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে বলেন তিনি।

ভাঙনের শিকার বুলবুল আহমেদ বলেন, “নদী হামার সবকিচু কাড়ি নিচে বাহে। অ্যাকনা ঘর আচিলো, তাও সোমবার নদীত চলি গেচে। হামারগুলের জমাজমি, বাড়িভিটা সগি আচিলো। নদী ভাঙি এহন কিচুই নাই।”

ছকিনা বেগম বলেন, “ঘরবাড়ি নদীত চলি গেচে। ছোয়া পোয়াক নিয়া খোলা আকাশের নিচে কাটা নাগছে।

“কোনো রকমে থাকার ব্যবস্থা কচ্ছি। গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়া বিপদে পরেছি। গবাদিপশু গুলাক বাইরে থুবাইছি।”

এ ভাঙনের কথা ‘শুনেছেন’ জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে-এ-জান্নাত রুমি বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।”

তবে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম মনে করেন তিস্তার ভাঙন কবলিত এ এলাকায় স্থায়ী বাঁধ প্রয়োজন।

স্থায়ী বাঁধের জন্য প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।

তবে চলমান ভাঙন রোধে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।