বেঙ্গালুরুর ভাইরাল ভিডিওর দুজন ‘যশোরের’

ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাওয়া দুইজনকে যশোরের বাসিন্দা বলে শনাক্ত করেছেন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2021, 12:25 PM
Updated : 30 May 2021, 12:35 PM

যশোরের চাঁচড়া মধ্যপাড়ার ভ্যানচালক মনু মিয়া বলেন, ভিডিওতে দেখা যাওয়াদের দুজন হলেন তার ছেলে আলামিন ও অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার তানিয়া।  

তানিয়াকে আলামিন স্ত্রীর পরিচয় দেন বলে মনু মিয়া জানান।

আলামিনকে আট মাস আগে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা তার বাবা মনু মিয়া।

ভারতের সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ২২ বছরের ওই বাংলাদেশি তরুণীকে বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতনের পর দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনায় বেঙ্গালুরু পুলিশ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা সবাই বাংলাদেশি এবং একই গ্রুপের সদস্য বলে বলে সেদেশের পুলিশের ধারণা।

এই ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা।

মনু মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আলামিনের স্বভাব চরিত্র ভালো না। আলামিনের কাছে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসত। তারা আমার ঘরে বসেই ইয়াবা খেত; যে কারণে আমি আট মাস আগে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেই। শুনিছি, আলামিন ইনডিয়া গেছে, তার বউয়ের বাপের বাড়ি। সেখানে সে কী করছে জানি না। তার সাথে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই।”

মনু মিয়া আরও জানান, আলামিন দুটি বিয়ে করেছেন। দুই সংসারে তার দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের ফেলে তিনি ভারতে চলে যান।

তিনি বলেন, “ভিডিওতে তাকে [আলামিন] গোলাপি ফুল হাতা গেঞ্জি ও হাফ প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে। তার পায়ে কালো রাবারের ব্যান্ড ছিল। ভিডিওতে থাকা লাল ফুলহাতা টপস পরা মেয়েটির নাম তানিয়া।”

তানিয়ার বাড়ি যশোরের অভয়গর উপজেলার নওয়াপাড়ায় উল্লেখ করে মনু মিয়া বলেন, “তানিয়াকে আলামিন স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভারতে নিয়ে যায়।”

বাবা মনু মিয়া আলামিনের দুটি বিয়ের কথা বললেও স্থানীয়রা বলছেন তিনটি বিয়ের কথা।

আলামিনের তৃতীয় স্ত্রী শারমিন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ভিডিও দেখে ঘটনা জেনেছেন এবং স্বামীকে শনাক্ত করেছেন।

শারমিনের সঙ্গে ভারতে আলমিনের পরিচয় হয়। আলামিন তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিয়ে করেন। তার এক ছেলে আছে।

শারমিন বলেন, “কিন্তু সে [আলামিন] ও শ্বশুরবাড়ির কেউ এখন আমার খোঁজ নেয় না। ছয় মাস আগে তারা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।”

আলামিনের সঙ্গে থাকা তরুণী সম্পর্কে শারমিন বলেন, “তার নাম তানিয়া। অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার ভেকুটিয়া গ্রামে তার বাড়ি। তাকে নিয়ে আলামিন ভারতে গেছে।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আলামিন বদ প্রকৃতির ছেলে। এ পর্যন্ত সে তিনটি বিয়ে করেছে।”

বিয়ে সংক্রান্ত গোলযোগে তিনি আলামিনকে নিয়ে সালিশও করেছেন এবং বিভিন্ন অপরাধের কারণে একবার তাকে এলাকাছাড়াও করা হয় বলে সেলিম জানান।

এ ব্যাপারে যশোরের চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রকিবুজ্জামান বলেন, “আমি নির্যাতনের ঘটনাটি শুনেছি। তবে এর সাথে আমার কর্ম এলাকার কেউ জড়িত কি-না জানা নেই।”

তবে সাংবাদিকরা অনেকে খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।