রোববার নগরভবনে দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলা বিষয়ে এক জরুরি সভায় এ কথা বলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র।
তিনি বলেন, “সিলেটে বারবার ভূমিকম্প হওয়ার বিষয়টিকে আমরা এলার্মিং হিসেবে নিয়েছি। আজ থেকেই নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অভিযান পরিচালনা করা হবে। যেগুলো রিমুভ করা যায়, সেগুলো দ্রুত রিমুভ করা হবে।”
ভূমিকম্পের মধ্যে শনিবার নগরীর পাঠানটুলা দর্জিবাড়ী এলাকায় আহাদ টাওয়ার নামে একটি ছয়তলা ভবন হেলে পড়ে। মেয়রের পরামর্শে রোববার সকাল থেকে ভবনের ১১টি ইউনিটের বাসিন্দারা সরে যেতে শুরু করেন।
গত দুই দিনে পাঁচবার ছোট মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সে অনুযায়ী দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশেষ প্রস্তুতি নিতে রোববার এই জরুরি সভা ডাকে সিটি করপোরেশন।
এর মধ্যে বাসা-বাড়ি ছাড়াও কালেক্টরেট ভবন-৩, এসএ রেকর্ড রুম, কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসসহ কয়েকটি সরকারি ভবন রয়েছে। বারবার নোটিস দেওয়ার পরও ভবনগুলো খালি করা হয়নি বলে জানান তিনি।
ঘন ঘন ভূমিকম্প হওয়ায় দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে সিলেট সিটি করপোরেশনের সকল বিভাগ, শাখা ও দপ্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি হটলাইন নম্বরও খোলা হয়েছে। যার নম্বর ০১৯১১২৪৯৬৯৯।
সভায় নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, “ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাদেরকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সেটা নিয়ে আমরা ভাবছি।”
নগরীর যেসব এলাকার রাস্তা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার মতো চওড়া নয়, সেগুলো প্রশস্ত করার কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে সিলেটের সকল প্রশাসন, দপ্তর ও সেবা সংস্থাগুলোকে নিজ নিজ কন্ট্রোল রুম খোলার অনুরোধ জানান মেয়র।
আগামী সাত দিনের জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশনসহ সকল জরুরি সেবা সংস্থা এবং সহযোগী সকল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বনেরও নির্দেশ দেওয়া হয় সভা থেকে।
সেই সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, স্বাস্থ্যসেবা খাত এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখার কথা বলেছে সিটি করপোরেশন।
নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে এসব স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সিলেটের সকল সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে দুর্যোগের সময় চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে অনুরোধ করেছেন মেয়র।