রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার মামলায় মাদানীর ‘স্বীকারোক্তি’

‘শিশুবক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2021, 05:27 PM
Updated : 28 May 2021, 05:27 PM

শুক্রবার গাজীপুর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শেখ নাজমুননাহারের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি নেওয়া হয়।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) শুভাশিষ ধর জানান, শুক্রবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এক দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন। পরে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

তিনি জানান, রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে র‌্যাব গত ৭ এপ্রিল রফিকুল ইসলাম মাদানীকে নেত্রকোনার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। এই সময় তার কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। তারপর র‌্যাবের  ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গাজীপুর নগরীর গাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮ ও ৩১ ধারা রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় বলে জানান তিনি।

শুভাশিষ ধর জানান, র‌্যাবের দায়ের করা মামলাটি প্রথমে বাসন থানা পুলিশ তদন্ত করছিল। এ মামলায় বাসন থানা পুলিশ তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে মাদানীকে জিগ্যাসাবাদ করেছিল।

“বাসন থানার তদন্তকালে জব্দকৃত মোবাইল ফোনে আপত্তিকর এডাল্ট কনটেন্ট বা অশ্লীল পর্ন ভিডিও পাওয়া যায়।”

ওই সময় গাজীপুর মহানগর উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “মাদানীর মোবাইল ফোন জব্দ করে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য পাঠানো হয়েছিল। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ওই মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ‘এডাল্ট কনটেন্ট’ দেখার প্রমাণ পেয়েছেন।”

তিনি নিয়মিত পর্ন ভিডিও দেখাসহ রাষ্ট্রিবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন; এ কারণে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮(৫)(ক) ধারা যুক্ত করা হয় বলে ইলতুৎমিশ জানিয়েছিলেন।

এই বিষয়ে র‌্যাব-১ এর মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরে মামলাটি র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। র‌্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার নজমুল হক মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্তের অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে রফিকুল ইসলামকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে একদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

“শুক্রবার কাশিমপুর কারাগারে ফেরত দেওয়ার আগে আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।”

তার বিরুদ্ধে একই আইনে গাজীপুর নগর পুলিশের বাসন থানায়ও আরেকটি মামলা হয়েছে।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে ঢাকার মতিঝিল, পল্টন ও তেজগাঁও থানায়ও বিভিন্ন অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গাজীপুর মহানগরের বাড়িয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে মারকাজুন নূর আল ইসলামিয়া নামে একটি আবাসিক মাদ্রাসা রয়েছে। হাফেজ রফিকুল ইসলাম মাদনী ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ও পরিচালক।