ঘূর্ণিঝড়ে রক্ষাকবচ সুন্দরবন প্লাবিত

ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থেকে বারবার বাঁচানো সুন্দরবনের বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বনবিভাগের কর্মকর্তারা।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2021, 06:09 PM
Updated : 26 May 2021, 06:09 PM

গত বছর আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের চাইতে এবার সুন্দরবনে ‘এক থেকে দেড় ফুট পানি বেশি বৃদ্ধি হয়েছে বলছেন বনবিভাগের একাধিক কর্মকর্তা।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডিএফও মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বুধবার দুপুরে উঁচু জোয়ারে তলিয়ে গেছে সুন্দরবনের প্রায় পুরো এলাকা। এতে বন বিভাগের জেটিসহ বনকর্মীদের আবাসস্থল ও অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে রাতে বাতাস ও প্রবাল স্রোতে দুবলার জেলে টহল ফাঁড়ির স্টাফ ব্যারাকের টিনের বেড়া, কর্মীদের মালামাল জোয়ারে ভেসে গেছে। জেলে টহল ফাঁড়ির মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সেখানকার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া বনকর্মীরা জানিয়েছেন।

সুন্দরবনের দুবলা জেলে পল্লীর প্রশাসনিক কর্মকর্তা তানভীর হাসান ইমরান জানান, বন্য প্রাণীদের উঁচু জোয়ারে জোয়ারের পানির কারণে বনের মধ্যে তুলনামূলক উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।

“মঙ্গলবার রাতে জোয়ারের সময় বঙ্গোপসাগর–সংলগ্ন সুন্দবনের দুবলা জেলে টহল ফাঁড়ির ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় কিছু হরিণ। বুধবার দুপুরের জোয়ারের সময়ও ফাঁড়ির পুকুরের পাড়ে কিছু হরিণ ও এর বাচ্চাদের আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।”

আশপাশ তলিয়ে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে বিভিন্ন সাপের আনাগোনা দেখা গেছে বলেন তিনি।

শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, সুন্দরবনে জোয়ারের পানি অনেক বেড়েছিল। বুধবার দুপুরের পর ভাটায় পানি কিছুটা নেমেছে। তবে সন্ধ্যা থেকে আবার জোয়ারের পানি বাড়ছে।

বন সংরক্ষক জয়নাল জানান, বঙ্গোপসাগরের তীরের দুবলায় বনকর্মীদের থাকার ঘরের টিনের চাল ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই। ঘরের নিচের পাটাতন পর্যন্ত জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আটটি টহল ফাঁড়িতে পাকা ঘর না থাকায় আগাম সতর্কতা হিসেবে

সেখানকার কর্মীদের পার্শ্ববর্তী স্টেশনগুলোর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় বলেন তিনি।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, বনকর্মীরা নিরাপদে থাকলেও বাতাস ও জোয়ারে আমাদের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন বিভাগের ৯টি জেটি, ১টি স্টাফ ব্যারাক এবং ২টি অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে বনের মধ্যে থাকা মিঠাপানির পাঁচটি পুকুরে।

বনের মধ্যে বন বিভাগের কর্মী, জেলে ও বাওয়ালি ছাড়াও বনের মিঠাপানির পুকুরগুলোর পানি পান করে বাঘ-হরিণসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী।

পুকুরে পানি ঢুকে পড়ায় দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির নাকচ করে বেলায়েত হোসেন বলেন, “এবার পানিতে লবণাক্ততা খুব বেশি নেই। ফলে খুব বেশি ক্ষতি হবে না।”