ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসে পটুয়াখালীতে ২শ গ্রাম প্লাবিত

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসে পটুয়াখালীর অন্তত দুই শত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিসঞ্জয় কুমার দাস, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2021, 03:30 PM
Updated : 26 May 2021, 04:01 PM

স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৭ থেকে ৮ ফুট উচ্চতার পানি ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে কয়েকশ মাছের ঘের, ডুবিয়ে দিয়েছে শত শত পুকুর ও ঘরবাড়ি। প্লাবিত করেছে বিস্তীর্ণ এলাকার রাস্তাঘাট ও ক্ষেতের ফসল। 

জেলা প্রশাসন জানায়, বুধবার নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাঁধ ভেঙে জেলার গোটা উপকূল দফায় দফায় প্লাবিত হয়েছে।

এতে বেড়িবাঁধ, স্লুইস গেইট, কাঁচা রাস্তা, মাছের ঘের, ফসলি জমি, গাছপালা, কাঁচা ঘরবাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, গবাদিপশু, হাস-মুরগি খামার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধূরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পানিতে প্লাবিত হয়ে জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন দুর্গতদের খোঁজ-খবর রাখছে এবং তাদের মাঝে ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে।

বুধবার পর্যন্ত বেড়িবাঁধ ভেঙে ও ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে তিন দফায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে বলে জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা জানান।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রনজিৎ দেবনাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জেলার প্রায় সব উপজেলার গ্রামই প্লাবিত হয়েছে। তবে কলাপাড়া উপজেলার ৭৬টি গ্রাম, রাঙ্গাবালীর ৩৮টি, বাউফলের ২০টি ও দশমিনা উপজেলার ১২টি গ্রাম ব্যাপকভাবে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

“ধারণা করা হচ্ছে সব মিলিয়ে জেলায় অন্তত দুই শত গ্রাম তলিয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করতে এখনও সময় লাগবে। তখন বিস্তারিত জানা যাবে।”

পানিতে ৫৯০টি মাছের ঘের, দুই হাজার ৬৩২টি পুকুর তলিয়ে গেছে বলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ জানান।

এসব ঘের ও পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে যাওয়ায় ৪৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান মৎস্য কর্মকর্তা।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, জেলার পায়রা/বড়িশ্বর নদীর মির্জাগঞ্জ মাজার পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
“পানির এত চাপ ছিল যে পটুয়াখালী ও কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন পয়েন্টে ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ১০টি স্লুইস গেইট আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান জানান, এই এলাকায় এরকম পানি আর কখনও হয়নি বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ থেকে ৮ ফুট পানিতে জলোচ্ছ্বাস হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চালিতাবুনিয়া ও চরমোন্তাজ।
বেড়িবাঁধ, পুকুর ও ঘেরের মাছসহ রাস্তাঘাট, গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান এই ইউএনও।