বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হকের সভাপতিত্ত্বে শুক্রবার জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় জানানো হয়, দুর্যোগ মোকাবিলায় তিনশ’র বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এসব আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়েও গুরত্ব দেওয়া হচ্ছে।
উত্তর আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, যা শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেতে পারে এবং আগামী সপ্তাহে ভারতের ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ উপকূলে পৌঁছাতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাগেরহাটের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত শুকনা খাবার মজুদ করতে এবং প্রশাসনের পাশাপাশি রেডক্রিসেন্ট ও ফায়ার সার্ভিসকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
এছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে জেলার ৩৪৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট উপজেলার স্কুল ও কলেজগুলো লোকজনকে আশ্রয় দিতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি রাখতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক এই প্রতিবেদককে বলেন, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতির মধ্যেই ঝড়ের পূর্বাভাস এসছে। এ কারণে যেসব ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিতে আসবেন তাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। এ সব আশ্রয় কেন্দ্রে স্যানিটাইজার ও মাস্ক রাখতে বলা হয়েছে।
বাগেরহাট ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আহাদ উদ্দিন বলেন, আসন্ন ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় বড় চ্যালেঞ্জ হল দুর্গত এলাকার মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা। গুরুত্বের সঙ্গে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে পারলে ঝড় মোকাবেলা করা অনেকটাই সহজ হবে।
ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে যাতে দুর্গত এলাকার মানুষ নিরাপদে পৌছতে পারে সেজন্য রেড ক্রিসেন্ট ও ফায়ার সার্ভিসের সেচ্ছাসেবীদের নিয়ে দল গঠন করা হয়েছে। দুর্যোগকালীন ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় অর্থ ও খাদ্য শস্য বরাদ্দ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বাগেরহাট জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা আরাফাত সিদ্দিকী বলেন, বাগেরহাট জেলায় ৩৪৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এর পাশাপাশি স্কুল কলেজগুলোও খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে এক কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং ২৮ মেট্রিকটন খাদ্য শস্য মজুদ রয়েছে। এছাড়া তিনটি পৌরসভার জন্য ছয় লাখ টাকা মজুদ আছে।
ঘুর্ণিঝড়কালীন ও ঘূর্ণিঝড় পরবর্তি ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের দ্রুত সহায়তা করা যায় সেজন্য জেলা প্রশাসন তৎপর থাকবে।
সভায় বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক, শিক্ষা ও আইসিটি) খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিমসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।