বজ্রপাতে চার জেলায় প্রাণ হারাল ১৪ জন

এক দিনে চার জেলায় বজ্রপাতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2021, 04:10 PM
Updated : 18 May 2021, 04:10 PM

মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে এসব দুর্ঘটনায় নেত্রকোণায় আটজন, ফরিদপুরে চারজন এবং ময়মনসিংহ ও সুনামগঞ্জে একজন করে প্রাণ হারান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

নেত্রকোণায় বজ্রপাতে প্রাণ হারাল আটজন

জেলার চার উপজেলায় বজ্রপাতে আট জন নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন আরও তিন জন।

মঙ্গলবার বিকালের দিকে কেন্দুয়া, খালিয়াজুরী, মদন ও পূর্বধলা উপজেলায় ঝড়-বৃষ্টির সময় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউপির বৈরাটি গ্রামের আসন খানের ছেলে বায়েজিদ (৪২), কান্দিউড়া ইউপির কুণ্ডলী গ্রামের তরব আলীর ছেলে ফজলু মিয়া (৫৫), খালিয়াজুরী উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের ছেলু ফকিরের ছেলে ওয়াছেক মিয়া (৩৫), আমীর সরকারের ছেলে বিপুল মিয়া (৩২) এবং বাতুয়াইল গ্রামের মঞ্জুরুল হকের ছেলে মনির হোসেন (২৮), মদন উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আব্দুল মন্নাফের ছেলে আতাবুর (২১), আব্দুল কাদিরের ছেলে শরিফ (১৮) এবং পূর্বধলা উপজেলার ধলামূলগাও ইউনিয়নের পাকই গ্রামের ইছহাক মিয়ার ছেলে জুনায়েদ (১১)।

আহতরা হলেন মদনের ফতেপুর গ্রামের মুসা মিয়ার ছেলে রবিন (১৫), হিরন মিয়ার ছেলে রোমান (১৮) এবং চন্দন মিয়ার স্ত্রী সুরমা আক্তার (২২)।

কেন্দুয়া থানার ওসি কাজী শাহ নেওয়াজ জানান, বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় কৃষক বায়েজিদ ও ফজলু মিয়া মাঠে কাজ করছিলেন। বজ্রপাতে তারা ঘটনাস্থলেই মারা যান।

খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, বিকাল সোয়া ৩টার দিকে বজ্রসহ ভারি বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় পুটিয়ার খালে ওয়াছেক, বিপুল ও মনির মাছ ধরছিলেন। তখন বজ্রপাতে তারা ঘটনাস্থলেই মারা যান।

মদন থানার ওসি ফেরদৌস আলম জানান, বেলা ৩টার দিকে বৃষ্টিপাতের মধ্যে বাড়ির সামনের মাঠে খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারান আতাবুর ও শরিফ; আহত হন রবিন ও রোমান। এছাড়া বাড়ির সামনে কাজ করার সময় বজ্রপাতে আহত হন সুরমা আক্তার।

আহতদের উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়েছে স্থানীয়রা বলেন ওসি ফেরদৌস।

পূর্বধলা থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম জানান, বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বাড়ির সামনে কয়েকজন শিশু খেলছিল। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় জুনায়েদ।

জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান জানান, বজ্রপাতে নিহতদের পরিবার পিছু ১৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া আহতদের চিকিৎসায় প্রত্যেককে দুই হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

ফরিদপুরে চারজনের মৃত্যু

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল, পৌরসভার পশ্চিম গঙ্গাবর্দী, মোল্লাডাঙ্গী মহল্লা এবং মধুখালী উপজেলার চাঁদপুরে বজ্রপাতে চারজন প্রাণ হারিয়েছেন।

নিহতরা হলেন মোল্লাডাঙ্গীর আনোয়ারা বেগম (৩৮), পশ্চিম গঙ্গাবর্দীর কৃষক কবির মোল্লা (৪৮), নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের দুলাল খান (৫৮) এবং মধুখালীর চাঁদপুরের কবির শেখ (৪০)।

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার সুভাষ বাড়ৈ জানান, বিকাল ৫টার দিকে বজ্রপাতে পৌরসভার মোল্লাডাঙ্গী মহল্লায় ঘটনাস্থলে আনোয়ারা বেগম মারা যান। ওই সময় তিনি স্বামী ও ছেলের সঙ্গে মাঠ থেকে ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।

“ধান নিয়ে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কৃষক কবির মোল্লা বজ্রপাতে মারা যান। এছাড়া মাঠে কাজ করার সময়

বজ্রপাতে মারা যান কৃষক দুলাল খান।”

মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. কবির সরদার জানান, মধুখালীর চাঁদপুরে মারা গেছেন কৃষক কবির শেখ। তিনি মাঠে পাট ক্ষেত পরিচর্যার কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

ময়মনসিংহে ফুটবল খেলতে গিয়ে মৃত্যু

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের খলিশাজান গ্রামে খোলা মাঠে এ দুর্ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন।

নিহত আতিকুল ইসলাম উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের খলিশাজান গ্রামের আজমত আলীর ছেলে।

তারাকান্দা থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, দুপুরে কয়েকজন যুবক রাস্তার পাশে খোলা মাঠে ফুটবল খেলতে নামেন। এ সময় বজ্রপাতে আতিকুল ইসলামসহ দুজন আহত হন।

স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার সময় আতিকুল মারা যান; আহত অপরজন হাসপাতালে ভর্তি আছে বলে জানান তিনি।

সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু

সুনামগঞ্জে হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে দোয়ারাবাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি নাজির আলম জানান।

মৃত আবু তাহের (৩৫) উপজেলার তেগাঙ্গা গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী তেগাঙ্গা গ্রামের সালিক মিয়া বলেন, তাহের হাওরে জাল নিয়ে মাছ ধরতে যান। এ সময় বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হলে আবার বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথে বজ্রপাতে আহত হন তাহের।

“স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দোয়ারাবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাহেরকে মৃত ঘোষণা করেন।”

ওসি বলেন, তাহেরের লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে স্বজনদের হস্থান্তর করা হবে।