শোলাকিয়ায় এবারও হচ্ছে না ঈদ জামাত

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহে গত বছরের মতো এবারও ঈদুল ফিতরের জামাত হবে না।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2021, 10:04 AM
Updated : 13 May 2021, 10:06 AM

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম। 

শুক্রবার সারাদেশে ঈদুল ফিতরের জামাত মসজিদে পড়তে হবে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

সবাইকে বাসা থেকে ওজু করে মসজিদে যেতে হবে মাস্ক পরে। কাতারে দাঁড়াতে হবে দূরত্ব রেখে। কোলাকুলি করা যাবে না।

গত বছরও রোজা ও কোরবানির ঈদে একই নিয়মে মসজিদে মসজিদে ঈদ জামাতের আয়োজন হয়েছিল। ধর্ম মন্ত্রণালয় এবারও একই রকম নির্দেশনা দিয়েছে।

জেলা প্রশাসক জানান, জেলা প্রশাসন ও শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটি মাঠে নামাজ না পড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদের ভিতর ঈদের নামাজ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

সে কারণে জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী শহীদী মসজিদে সকাল ৯টায় ঈদের প্রধান জামাত এবং শহরের প্রাচীন পাগলা মসজিদে তিনটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান।

এছাড়াও জেলার সকল মসজিদে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। 

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছরও দেশের সবচেয়ে বড়ো এই ঈদগাহে ঈদের জামাত হয়নি। ওই বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা দুই ঈদেই শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়নি।

১৮২৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাত একর জায়গায় দেশের বৃহত্তম ঈদগাহ শোলাকিয়ায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণে নিয়মিতভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ঈশা খাঁর ৬ষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সনে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির উপর এই ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম ‘সোয়া লাখি মাঠ’, সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে এক সময় তা শোলাকিয়া মাঠ হয় বলে কথিত আছে।

বাংলাদেশের দূরদূরান্তের জেলা এমনকি বিদেশ থেকেও মুসল্লিরা ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করে থাকেন এখানে। জামাতে অংশগ্রহণের জন্য ঈদের ২/৩ দিন আগে থেকেই দেশের দূরের মুসল্লিদের আসা শুরু হয়। তারা ঈদগাহ মসজিদ, গেস্ট হাউস, এমনকি ঈদগাহের খোলামাঠেও রাত্রিযাপন করেন।

ঈদ জামাতে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয় সরকারিভাবে। একটি ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে এবং অপর ট্রেনটি ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া মাঠের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। নামাজ শেষে ট্রেন দুটি আবার ময়মনসিংহ ও ভৈরবের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।