ঈদে বাড়তি ছুটি দাবি: গাজীপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত ২১

ঈদে বাড়তি ছুটির দাবিতে গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 May 2021, 09:54 AM
Updated : 10 May 2021, 11:28 AM

সোমবার দুপুরে টঙ্গীর মিল গেইট এলাকায় এ ঘটনায় অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের (জোন-২) অতিরিক্ত সুপার মো. জালাল উদ্দিন বলেন,  “সরকার তিন দিনের ছুটি ঘোষণা করলেও টঙ্গীর মিল গেইট এলাকায় হা-মীম গ্রুপের পোশাক শ্রমিকরা ১০ দিন ছুটির দাবিতে বিক্ষোভ করে। দুপুরের দিকে তারা কারখানায় ভাঙচুর চালিয়ে পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে।

“পুলিশ তাদের সরাতে গেলে শ্রমিকরা পুলিশের দিকে ঢিল ছোড়ে। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।”

এ সময় প্রায় ২০ মিনিট ওই মহাসড়কে যান চলাচল বিঘ্নিত হয় জানিয়ে শিল্প পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রায় আধা ঘণ্টা পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিলে আবার যান চলাচল শুরু হয়।

হা-মীম গ্রুপের পোশাক কারখানার কর্মী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সরকারের তিন দিনের ছুটির পরিবর্তে কর্মীরা ১০ দিন ছুটি চেয়েছিল। কর্তৃপক্ষ সাত দিন মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে।

“একপর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভে হামলা চালায়, রাবার বুলেট মারে। আমাদের কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছে।”

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. পারভেজ হোসাইন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় রাবার বুলেটে আহত ২০ শ্রমিককে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের ১১ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া রুবেল নামে পুলিশের একজন এএসআইকে আহত অবস্থায় আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান ডা. পারভেজ।

হা-মীম গ্রুপের টঙ্গী জোনের এজিএম মিজানুর রহমান বলেন, “শ্রমিকরা দাবি তোলার পর গতকালই সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তারা ১০ দিন দাবি করে আজ সকালে ভাঙচুর করেছে। কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরা, দরজা-জানালার কাচ, কারখানার গাড়িসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে মহাসড়কে চলে যায় তারা।”
টঙ্গীর এই কারখানায় ১৫ হাজারের মত শ্রমিক রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “কারখানায় ভাঙচুরের পর সবাই মহাসড়কে চলে যায়। পরে তারা আর কারখানায় ফেরেন নাই। আমরা তদন্ত করে দেখছি কী ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা পরে চিন্তা করব।”

এদিকে কালিয়াকৈর উপজেলার বিশ্বাসপাড়া এলাকার স্টার লিংক ডিজাইন নামে আরেকটি কারখানার শ্রমিকরা ঈদে ১২ দিন ছুটির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।

ওই কারখানার শ্রমিক আসমা খাতুন বলেন, সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে তারা ঈদে তিন দিনের ছুটির কথা জানতে পারেন। তখন তারা ১২ দিন ছুটির দাবিতে কাজ বন্ধ করে কারখানার সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নেন।

পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১০ দিনের ছুটির ঘোষণা দিলে শ্রমিকরা ফিরে যায় বলে জানান গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মো. কমর উদ্দিন জানান।

তিনি বলেন, দুই কারখানা এলাকাতেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।