মহামারীকালে দরিদ্র মানুষের সহায়তায় ছুটছেন শিক্ষিকা বীথি

করোনাভাইরাস মহামারীতে মাস্ক, খাবার ও শিশুদের কাপড় সহায়তা দিতে বাড়ি বাড়ি ছুটে যাচ্ছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার জয়িতা সম্মাননা পাওয়া শিক্ষিকা ফৌজিয়া বীথি।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2021, 04:35 PM
Updated : 9 May 2021, 04:35 PM

স্থানীয়রা জানান, করোনাভাইরাসের প্রথম ধাপ থেকেই তিনি দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

নিজ হাতে তৈরি মাস্ক সড়কের মোড়ে দাঁড়িয়ে বিতরন করেছেন। বেতনের টাকায় গরিব মানুষের ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন রান্না করা খাবার। ঈদে নিজের ঘরের ছাগল জবাই করে মাংস বিতরণ করেছেন। বাজার থেকে কাপড় কিনে শিশুদের জামা-কাপড় বানিয়ে বিতরণ করেছেন অসহয় পরিবারের শিশুদের মাঝে।

এলাকাবাসী জানান, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপে আবার তিনি নেমে পড়েছেন মানুষের সহায়তায়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ-খবর নেওয়াসহ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কখনও ভ্যানে, কখনওবা হেঁটে গ্রামের পথে ব্যাগ নিয়ে ছুটতে দেখা যায় তাকে।

শুধু করোনাকালে নয়, স্বাভাবিক সময়েও তিনি গরিব অসহয় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেউ অসুস্থ হলে কিংবা কোনো প্রসূতির সমস্যার কথা শুনলে ছুটে গেছেন তার কাছে সহায়তা নিয়ে।

ফৌজিয় বীথির প্রতিবেশী হায়দার আলী বলেন, “বিপদে প্রতিবেশীরা সব সময়ই বীথিকে পাশে পেয়েছে। একজন মেয়ে হিসেবে বীথি যা করেন আমরা তা পারিনি। একজন মানবিক এবং প্রতিবাদী মেয়ে তিনি।”

হায়দার আলী জানান, বীথির মুক্তিযোদ্ধা বাবা ছিলেন শিক্ষক। বাবার প্রতিবাদী ও মানবিক গুণ তিনি পেয়েছেন।

‘নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নুতন উদ্যোমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী’ ক্যাটাগরিতে ২০২০ সালে তিনি জয়িতার সম্মাননা লাভ করেছেন।

বগুড়া জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মোছা. ফৌজিয়া বীথি উপজেলায় জয়িতা সম্মাননায় শ্রেষ্ঠ হয়ে বগুড়া জেলায়ও শ্রেষ্ঠ হয়েছিলেন। 

ধুনট উপজেলার বেলকুচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফৌজিয়া বীথি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুরস্কার কিংবা বাহবা পাওয়ার জন্য একাজ করি না; করি মনের টানে। কারো কোনো সমস্যার কথা শুনলে ঘরে বসে থাকতে পারি না। করোনাকালে স্কুল বন্ধ, সরকার বেতন দিচ্ছে। বেতনের টাকায় এসব করছি। আমার সংসার তো চলছে। বেতনের টাকা না হয় এই মহা দুর্যোগে অসহায় মানুষকে বিলিয়ে দিলাম।”