মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মাদ মুসা জানান, জাপানের কোবে বন্দর থেকে ছয়টি বগি নিয়ে ছেড়ে আসা বেলিজ পতাকাবাহী জাহাজ 'এমভি ওশান গ্রেস' রোববার দুপুরে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে।
এই নিয়ে এই বন্দরে মেট্রোরেলের দুটি চালান এল। এর আগে গত ৩১ মার্চ ছয়টি বগি নিয়ে এসেছিল প্রথম চালান।
মোহাম্মাদ মুসা জানান, গত ২১ এপ্রিল সকালে জাহাজীকরণ শেষে জাপানের কোবে সমুদ্রবন্দর থেকে দ্বিতীয় চালানের ছয় সেট ট্রেন নিয়ে বাংলাদেশে রওনা দিয়েছিল 'এমভি ওশান গ্রেস'। এই নিয়ে মোংলা বন্দরে মেট্রোরেলের দুটি চালান পৌঁছাল।
এর আগে আসা প্রথম চালানের বগিগুলো নদী পথে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
এমভি ওশান গ্রেস জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনসিয়েন্ট স্টিমশিপ কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “ছয়টি বগি নিয়ে বেলিজ পতাকাবাহী জাহাজ 'এমভি ওশান গ্রেস' মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব খালাস শুরু করব।”
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-০৮ এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবিএম আরিফুর রহমান বলেন, “মেট্রোরেলের লাইন-৬ কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-০৮ আওতায় এর জন্য ২৪টি যাত্রীবাহী রেল কোচ আমদানি করা হবে। প্রতিটি কোচে ছয়টি বগি থাকবে।”
তিনি বলেন, “ছয়টি বগির একটি প্যাকেজে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ প্রায় একশ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে আমাদের। রোববার দুপুরে দ্বিতীয়বারের মতো মেট্রোরেলের ছয়টি বগি মোংলায় এসেছে। এর আগে আসা ছয়টি বগি আমরা ঢাকায় মেট্রোরেলের নিজস্ব স্থানে নিয়েছি।”
তিনি জানান, মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য ২৪ সেট ট্রেন তৈরি করছে জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি। প্রতি সেট ট্রেনের দুপাশে দুটি ইঞ্জিন থাকবে। এর মধ্যে থাকবে চারটি করে কোচ। ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্ট বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে। স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোতে থাকবে লম্বালম্বি আসন। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দুপাশে থাকবে চারটি করে দরজা। জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত প্রতিটি ট্রেনের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা হবে এক হাজার ৭৩৮ জন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ মুসা জানান, খুব দ্রুত বগিগুলো খালাস শুরু হবে। ২০২২ সালের মধ্যে ২৪টি জাহাজে আরও ১৪৪টি বগি মোংলা বন্দর থেকে খালাস হবে।
রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের এমআরটি-৬ নামের এই প্রকল্পটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্পের সার্বিক গড় অগ্রগতি ছিল ৪১ দশমিক ২৬ শতাংশ, মার্চে তা দাঁড়ায় ৪৪ দশমিক ১২ শতাংশ, এপ্রিলে ৪৪ দশমিক ১২ শতাংশ এবং মে নাগাদ অগ্রগতি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৪ দশমিক ৬৭ শতাংশে পৌঁছেছে।
প্রকল্পটি দুটি অংশ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রথমটি উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। এই অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ২০২০ সালের মে মাসে হয়েছে ৭১ দশমিক ১২ শতাংশ, যেখানে ওই বছরের ফেব্রয়ারিতে ছিল ৬৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ২০২০ সালের মে মাসে হয়েছে ৩৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, যেখানে ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৩৭ দশমিক ৮০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: