জনস্রোত ঠেকানো যাচ্ছে না শিমুলিয়ায়

ফেরি বন্ধ ও বিজিবি মোতায়েন করেও শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে বাড়িমুখোদের স্রোত ঠেকানো যাচ্ছে না।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2021, 06:00 AM
Updated : 9 May 2021, 10:08 AM

রোববার সকাল থেকে দক্ষিণের জেলাগুলোতে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার মানুষ ঘাটে আসতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে ভিড় আরও বাড়ে।

বিআইডব্লিউটিসি রাতভর ১৫টি ফেরি দিয়ে পারাপার করলেও ভোর থেকে তা বন্ধ করে দেয়। তবে সকাল পৌনে ৮টার দিকে আটটি অ্যাম্বুলেন্সসহ 'ফেরি ফরিদপুর' ১ নম্বর ঘাট থেকে ছেড়ে যায়।

মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে ঈদের আগে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে দিনের বেলা ফেরি চলাচল বন্ধ। কিন্তু রোববার সকালে অ্যাম্বুলেন্স বহনের জন্য ‘শাহ পরান’ নামের ফেরিটি ঘাটে ভেড়া মাত্র ঘরমুখো বেপরোয়া মানুষ মুহূর্তের মধ্যে তাতে উঠে পড়ে।

বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দিনের বেলায় ফেরি বন্ধ। শুধু জরুরি পরিষেবার কিছু যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। সেই ফেরিতেই লোকজন স্রোতের মত উঠে যাচ্ছে।

“করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যেও লোকজন বাড়ি ছুটছেন। কোনো বাঁধাই মানছেন না।”

সকালে ১ নম্বর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ফেরি ফরিদপুরে ওঠার জন্য যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। পুরো ফেরি মানুষে ভর্তি হয়ে যেতে সময় লাগে কয়েক মিনিট

লোকজনের চাপে ফেরির ডালা ওঠানো যাচ্ছিল না। পুলিশ তখন লাঠিপেটা করে ফেরির ডালা ওঠানোর ব্যবস্থা করে। পরে গাদাগাদি করে ছোট ফেরিটিতে করে প্রায় দেড় হাজার মানুষ ওপারের কাঁঠালবাড়ি ঘাটের দিকে রওনা দেয়।

ফেরি ঘাটের আশপাশে জেলে নৌকা ও ট্রলারে করেও অনেকে পদ্মা পার হওয়ার চেষ্টা করেন। পদ্মা নদীর মাওয়া মৎস্য আড়ত সংলগ্ন ঘাট এলাকা, পদ্মা নদীর লৌহজং চ্যানেল এলাকা এবং শিমুলিয়া ঘাট এলাকা থেকে নৌপুলিশ সেসব ট্রলার আটক করে।

মাওয়া নৌ-পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ জেএম সিরাজুল কবির বলেন, ফেরি বন্ধের নির্দেশনার পরও রোববার প্রচুর যাত্রী শিমুলিয়া ঘাটে আসছে। ফেরিতে উঠতে না পেরে অনেকে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ইঞ্জিন চালিত ছোট ছোট ট্রলারে করে পদ্মা পার হওয়ার চেষ্টা করে।

“এসব ট্রলারে এক থেকে দেড়শ যাত্রী উঠেছিল। ট্রলারের ১২ জন চালককেও আটক করা হয়েছে।”

লকডাউনে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকার কথা, কিন্তু ঈদ যাত্রায় মানুষের গ্রামে ফেরার তীব্র আকাঙ্ক্ষাকে পুঁজি করে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও কৌশলে বিভিন্ন রুটে চলছে দূরপাল্লার বাস।

আবার জেলার বাস এবং বিভিন্ন ছোট যানবাহন, এমনকি পণ্যের ট্রাক বা পিকআপে চড়েও অনেকে ঢাকার দিক থেকে ভেঙে ভেঙে শিমুলিয়ায় আসছেন। পদ্মা পার হয়ে দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায় যেতে চান তারা।

ঢাকা থেকে দক্ষিণের লঞ্চ বন্ধ থাকায় সেসব পথের যাত্রীরাও নিষেধ না মেনে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি হয়ে বাড়ি যেতে চাইছেন।

মুন্সীগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি থেকে মানুষকে রক্ষায় ঈদে যার যার কর্মস্থলের এলাকায় থাকতে বলা হয়েছে।

“তারপরও লোকজনের ঢল নামছে। তাই দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ পুলিশও কাজ করছে।”