তদন্ত কমিটির মুখোমুখি বিদায়ী রাবি উপাচার্য

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী উপাচার্যকে তার শেষ কর্মদিবসে নিয়োগদানকে কেন্দ্র করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2021, 03:24 PM
Updated : 8 May 2021, 03:24 PM

শনিবার তদন্ত কমিটির এ সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হন সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান।

গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি এসব নিয়োগ সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদেরও সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে।

দিনব্যাপী সাক্ষাৎকার শেষে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মুহম্মদ আলমগীর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষামন্ত্রণালয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবশেষ নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি ঘোষণা করেছে।

“সেই পরিস্থিতিতে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সাক্ষাৎকার আমরা নিয়েছি। আশা করছি, অল্প দিনের মধ্যেই আমরা একটি প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে পারব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দপ্তরে সকাল পৌনে ১১টা থেকে বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে এই সাক্ষাৎকার গ্রহণ। এর মধ্যে বিকেল ৩টা থেকে পৌনে ৪টা পর্যন্ত অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় ।

সাক্ষাৎকার চলাকালে ওই দপ্তরের বাইরে উপস্থিত হয়ে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিরা নানা রকম স্লোগান দিয়েছে।

তদন্ত কমিটির ডাকে সদ্য উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পাওয়া উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা, উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়া, রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম, নিয়োগপত্রে স্বাক্ষরকারী সংস্থাপন শাখার উপ-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী, পরিষদ শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন-অর-রশীদ, বিদায়ী উপাচার্যের জামাতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক এটিএম শাহেদ পারভেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করে আসা প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’দের সাতজন এ সাক্ষাৎকার দেন।

সাক্ষাৎকার বোর্ডে তদন্ত কমিটির অন্য সদস্য ও ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জাকির হোসেন আখন্দ এবং সদস্যসচিব ইউজিসির পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) মোহাম্মদ জামিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

বিদায়ী উপাচার্য এম সোবহান যা বলছেন

সাক্ষাৎকার শেষে বিকেল ৫টায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সদ্য বিদায়ী উপাচার্য এম সোবহান।

তিনি বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-১৯৭৩ এর ১২ (৫) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমি এই নিয়োগ দিয়েছি। এখানে কেউ হয়ত বলার চেষ্টা করছে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ছিল। কিন্তু আমি মনে করি, যেখানে সুস্পষ্ট একটা আইন আছে, ক্ষমতা দেওয়া আছে, সেখানে নিষেধাজ্ঞা আসতে হলে তো ওই আইনটা (অ্যাক্ট) বাতিল হওয়া উচিত আগে।

নিয়োগদান প্রসঙ্গে তিসি বলেন, “যারা ডিজার্ভ করে তারাই এই নিয়োগটা পেয়েছে। তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে যাচ্ছিল, আমি এই নিয়োগ মানবিক কারণে দিয়েছি। যৌক্তিক মনে করেই আমি ছাত্রলীগকে চাকরি দিয়েছি।”

যোগদান কার্যক্রম স্থগিত

এদিকে, শনিবার বিকেলে এক আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম এসব নিয়োগের যোগদান কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দপ্তরকে চিঠি পাঠান।

এতে বলা হয়, “৬ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পত্রের মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৫/৬ মে ইস্যুকৃত সকল অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।

“বিধায় তদন্ত কমিটির রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কোনরূপ সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত নিয়োগপত্রের যোগদান এবং তৎসংশ্লিষ্ট সকল ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে অনুরোধ করা হল।”