গত সোমবার কলেজের শহর ক্যাম্পাসের মাঠের পশ্চিম-উত্তর প্রান্তে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু হয়।
মঙ্গলবার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আল আমিন এই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
শহরের প্রাণকেন্দ্রে বড় এই মাঠটি প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়ার বিপক্ষে ফরিদপুরের সচেতন নাগরিক সমাজও অবস্থান নিয়েছে।
রাজেন্দ্র কলেজের দুইটি ক্যাম্পাস আছে। একটি শহরতলীর বায়তুল আমান, যেখানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ক্লাস হয়; অন্যটি শহরের প্রাণকেন্দ্র ঝিলটুলিতে, যেখানে স্নাতক (পাস) শ্রেণির ক্লাস হয়।
এই বিষয়ে জেলার সাধারণ মানুষের আপত্তি ওঠার পর প্রশাসনের নজরে আসে; পরে স্থানীয় প্রশাসন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।
১৯১৮ সালে ফরিদপুরর শহরের প্রাণকেন্দ্রে ৫৪ দশমিক এক একর জমির উপর স্থাপিত হয় রাজন্দ্র কলেজ। আগে এই জায়গাটি মেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে কলেজের কলেবর বেড়ে গেলে শহর থেকে আনুমানিক তিন কিলোমিটার দূরে কলেজের আরেকটি ক্যাম্পাস চালু হয় ১৯৮৩ সালে।
রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোশাররফ আলী বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে রাজেন্দ্র কলেজের দুই ক্যাম্পাসের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। কিন্তু রায়তুল আমান ক্যাম্পাসের জন্য ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীরের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে।
অধ্যাপক মোশাররফ আলী আরও বলেন, “আমার চাকরির বয়স শেষ পর্যায়ে। আমি চেয়েছিলাম শহর ক্যাম্পাসে একটি সীমানা প্রাচীর হোক। এই জন্য আরিফকে দিয়ে কাজটি শুরু করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের লোক এসে সেটি বন্ধ করে দিয়েছে।”
এই বিষয়ে ফরিদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি শিপ্রা গোস্বামী বলেন, যেভাবে শহর ক্যাম্পাসে দেওয়াল দেওয়া হবে তাতে কালেজের নিরাপত্তা রক্ষিত হবে না, শুধুমাত্র মাঠটি আটকে দেওয়া হবে।
“আমরা মনে করি, শহরের প্রাণ হচ্ছে এই মাঠটি। অভিভাবকগণ বাচ্চাদের বিকালে এই মাঠে নিয়ে যান দম ফেলতে। সীমানা প্রাচীর করা হলে শহরবাসীর জন্য দম ফেলার জায়গাটা থাকবে না।”
ফরিদপুরের সামাজিক সংগঠন ‘আমরা করবো জয়’ সভাপতি সৌরব আহমেদ বলেন, রাজেন্দ্র কলেজের শহর ক্যাম্পসের এই মাঠটি উন্মুক্ত রাখা হলে শহরের শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করতে পারবে। পাশাপাশি প্রকৃতিক পরিবেশ রক্ষিত হবে। তাই এ মাঠ সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা জরুরি।