মেহেরপুরে খাদ্যগুদামে পচা চাল সংগ্রহ

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা খাদ্য গুদামে নিম্নমানের দুর্গন্ধযুক্ত চাল সংগ্রহের `সত্যতা’ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় কর্মকর্তারা।

মেহেরপুর প্রতিনিধিতুহিন আরন্য, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2021, 06:18 PM
Updated : 5 May 2021, 06:18 PM

কীভাবে পচা চাল গুদামে ঢুকল তা তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

মঙ্গলবার উপজেলা খাদ্য শস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির উপদেষ্টার নেতৃত্বে গাংনী উপজেলার কর্মকর্তারা খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করেন।

মনিটরিং কমিটির প্রধান উপদেষ্টা হলেন মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন।

মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকনের সঙ্গে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, ইউএনও আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম শাহাবউদ্দীন আহম্মেদ এবং গাংনী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা সাব্বির হোসেন গুদাম পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে গাংনী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অবস্থিত ১ নম্বর খাদ্যগুদামের ৯ নম্বর লটে ৭৮.৭৮৬ মেট্রিক টন এবং গাংনী শিশিরপাড়া মোড়ে অবস্থিত ৩ নম্বর খাদ্য গুদামের ৭ নম্বর লটে ১৫৪.৮৬০ মেট্রিক টন চাল পচা, দুর্গন্ধযুক্ত, পোকাযুক্ত খাবার অনুপোযোগী বলে চিহ্নিত করা হয়।

এই সময় পরিদর্শন দলের সদস্যরা তাৎক্ষণিক এর তদন্ত করে দোষী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা বলেন।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার-ইউএনও আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, “আমি প্রথম ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে নিম্নমানের চাল সংগ্রহের অভিযোগ পাই। বিষয়টি খাদ্য বিভাগকে জানাই। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। এখন কমিটি তদন্ত করে দোষীদের বিচার করবে।”

গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ খালেক বলেন, “গুদাম পরিদর্শনে ইউপি চেয়ারম্যান ও দলীয় নেতা কর্মীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এর সাথে কারা জড়িত খুঁজে বের করা হবে। এই পচা এবং খাবার অনুপোযোগী চাল সরবরাহ করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে। এটা খুবই অন্যায় নিকৃষ্ট কাজ করা হয়েছে।”

গাংনী উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা হাসান সাব্বির বলেন, “আমি নতুন জয়েন করেছি। যাওয়ার সময় আমার আগের কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান আমাকে জানিয়েছিলেন- করোনাকালীন খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে জরুরিভাবে কিছু নিম্নমানের চাল ক্রয় করতে হয়েছিল। কারণ গত অগাস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে সরকারি নির্দেশে আমরা ৩৬ টাকা দরে নিম্নমানের চাল ক্রয় করতে বাধ্য হই। ওই সময় খোলা বাজারে চালের দাম ছিল ৪২-৪৪ টাকা। তাই বাধ্য হয়ে নিম্নমানের চাল ক্রয় করে গুদামজাত করেছি।”

বিষয়টি জানার পর তিনি ইউএনওকে অবগত করেছেন বলে জানান। 

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, “দুটি খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করে পচা নিম্ন মানের চাল পাওয়া গেছে। এটি অমার্জনীয় অপরাধ। আমার কাছে এমনও অভিযোগ রয়েছে- চাল সরবরাহ করার সময় বস্তায় দুই কেজি করে কম দেওয়া হয়েছে।”

পচা ও নষ্ট চাল গুদামে সংরক্ষণ ও বিতরণ করে খাদ্য কর্মকর্তা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জড়িতদের বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”