সুন্দরবনের পোড়া অংশে ফের ধোঁয়ার কুণ্ডলী

সুন্দরবনে দুদিন আগের আগুন নিভে যাওয়ার পর ওই স্থানে আবার ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে। তবে কোথাও আগুন জ্বলতে দেখা যায়নি।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2021, 10:56 AM
Updated : 5 May 2021, 10:56 AM

বুধবার সকালে বনকর্মীরা ওই এলাকায় কয়েকটি স্থানে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পান এবং সেখানে পানি ছিটানো শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিটও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।

গত সোমবার সকালে শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি টহল ফাঁড়ি এলাকায় আগুন লাগে। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার বিকালে আগুন নিভে যাওয়ার ঘোষণা দেয় বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস।

এই অগ্নিকাণ্ডে বনের এক দশমিক ৩১ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। তবে আগুর লাগার কারণ সম্পর্কে কিছুই বলেনি বনবিভাগ।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা-ডিএফও মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবার সকালে সুন্দবনের দাসের ভারানি এলাকায় নিভে যাওয়া আগুনের কয়েকটি স্থানে বনবর্মীরা নতুন ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পান।

“তারা সেসব স্থানে পানি ছিটিয়ে তা নেভাচ্ছেন। এখানে দাউ দাউ করে জ্বলার মতো কোনো বড়ো আগুন দেখছি না। তারপরও আগাম সতর্কতা হিসেবে ধোঁয়ার থেকে যেন আগুনের বিস্তার লাভ না করতে পারে সেজন্য ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট নিয়ে কাজ করছি।”

নিভিয়ে ফেলা স্থানে আবার কেন আগুন এই প্রশ্নের জবাবে এই বন কর্মকর্তা বলেন, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে গত দেড় দশকে ২৩ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব আগুন নেভানোর কাজে তিনি নিজে থেকেছিলেন।

“বনে যেসব বৃক্ষরাজি আছে তার পাতা মাটিতে পড়ে জমে থাকে। পরিষ্কার না করায় এই পাতা পড়ে বড়ো বড়ো স্তূপ হয়ে যায়। যেসব এলাকায় পাতার স্তূপ বেশি থাকে সেসব এলাকায় আগুন লাগলে বেশি বেশি পানি ছিটানো না হলে আগুন দেরিতে নেভে।”

এসব কারণে সুন্দরবনের বেশ কয়েকটি এলাকায় তিন চারদিন ধরে আগুন ছিল এবং ওই আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে সে সময় বেগ পেতে হয়েছিল বলে তিনি জানান।

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত সোমবার যে এলাকায় আগুন ধরেছে সেখানে লতা-গুল্ম ও গাছপালায় ভরা। সেসব গাছের পাতা পতে মাটিতে বড়ো বড়ো স্তূপ হয়েছিল। এই স্তূপে আগুন লাগার কারণে স্তূপের ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই স্তূপের নিচ থেকে আগুন ধীরে ধীরে সামনে এগোয়।

“সোমবার বিকাল এবং মঙ্গলবার সকাল থেকে একটানা পানি ছিটানো হয়। এরপরও কিছু এলাকায় পাতার নিচে মাটির সাথে কিছু আগুন লুকিয়ে থাকায় আজ বুধবার কয়েকটি স্থানের আগুনের ধোঁয়া দেখা গেছে। এই আগুন পুরোপুরি নেভাতে আমাদের অন্তত আরও তিন চারদিন গভীর পর্যক্ষেণে থাকতে হবে।”

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক-এসিএফ জয়নাল আবেদিন বলেন, আগুন যাতে বড়ো এলাকায় বিস্তৃতি লাভ করতে পারে সেজন্য প্রায় দেড় একর এলাকায় ফায়ার লাইন [আগুনের অংশ বনভূমি অন্য এলাকা থেকে আলাদা করা] কেটে দেওয়া হয়েছে।