মঙ্গলবার সকালে খুলনার তেরখাদা উপজেলার সদর ইউনিয়ানের পারোখালী গ্রামে মিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাবা-মা ও ছোট দুই বোন হারিয়ে বাকরুদ্ধ মিম শুধু ফ্যালফ্যাল করে সবার মুখের দিকে তাকাচ্ছে।
মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদীতে সোমবার সকালে একটি বাল্কহেডের সঙ্গে একটি স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়। এ সময় স্পিডবোটটি ডুবে যায়। পরে ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওই পরিবারে এখন বেঁচে আছে শুধু মিম (৯)। দুর্ঘটনার পর তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
প্রথমে আহত অবস্থায় তাকে শিবচরের পাচ্চর রয়েল হাসপাতালে নেওয়া হয়। একটু সুস্থ হলে দোতরা স্কুলের মাঠে আনা হয় মিমকে। মা, বাবা, দুই বোন নেই জেনে তার কান্না থামছিল না।
“দাদিকে শেষবারের মতো দেখার জন্য আমরা সবাই দাদাবাড়ি আসছিলাম। কিন্তু এখন বাবা-মা ও বোনেরা কেউ বেঁচে নেই; আমি একা হয়ে গেলাম।”
সোমবার লাশের সারি থেকে মনির, হেনা, সুমি ও রুমির লাশ শনাক্ত করে মিম। পরে ওইদিনই তাদের লাশ শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পারোখালী মাঠে মনির, হেনা, সুমী ও রুমীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মনিররের মা লাইলী বেগমের কবরের পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
মনির হোসেনের ছোট ভাই মো. কামরুজ্জামান জানান, চার ভাইবোনের মধ্যে মনির ছিল তৃতীয়। ঢাকার মিরপুর-১১ মসজিদ মার্কেটে কাটা কাপড়ের দোকান ছিল তার। তিনি থাকতেনও ওই এলাকায়।
তিনি বলেন, “মনির মাকে শেষবারের মতো দেখতে বাড়ি আসছিল। কিন্তু মাকে আর দেখা হলো না, নিজেই পরিবারকে নিয়ে মায়ের সঙ্গেই চলে গেল।”
মার কবর দেওয়া হয়েছে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায়। আর মঙ্গলবার কবর দিলাম ভাই-ভাবি, ভাইঝিদের।”
মনির শিকদারের বেয়াই কিসমত হাওলাদার বলেন, “পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে সুখের সংসার ছিল মনিররের। কি থেকে কি হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। এখন বাবা-মা হীন ছোট মিমের কী হবে?”