তিন মাসে ফের অগ্নিকাণ্ড সুন্দরবনে

সুন্দরবনে তিন মাসের মধ্যে ফের আগুন ধরে বিরাট এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2021, 12:26 PM
Updated : 3 May 2021, 12:26 PM

সোমবার বেলা ১১টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি টহল ফাঁড়ি এলাকার ২৪ নম্বর কম্পার্টমেন্টে আগুন ধরে।

প্রায় দুই একর এলাকায় আগুন ছড়িয়েছে বলে স্থানীয়রা বললেও বনবিভাগ তাৎক্ষণিক কোনো হিসাব দিতে পারেনি। 

আগুন নেভাতে স্থানীয় লোকজন ও বনবিভাগ কাজ করছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্গম হওয়ায় ফায়ার সার্ভিস পৌছাতে পারেনি।

জেলে, বাওয়ালী কিংবা মৌয়ালদের ফেলে দেওয়া বিড়ি বা সিগারেটের আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে বনবিভাগ।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর এলাকার চার শতক বনভূমি পুড়ে যায়।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা সদর থেকে সুন্দরবনের দূরত্ব প্রায় দশ কিলোমিটার। রায়েন্দা ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের উপর বয়ে গেছে মরা ভোলা নদী। এই নদী পার হয়ে সুন্দরবন। এরপর প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনের দাসের ভারানি টহল ফাঁড়ি, যেখানে আগুন ধরেছে।

দক্ষিণ রাজাপুর, মাঝেরচর ও রসুলপুর গ্রামের শতাধিক গ্রামবাসী আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছে।

আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেওয়া দক্ষিণ রাজাপুর, মাঝেরচর ও রসুলপুর গ্রামের আবজাল চাপরাশি, রেজাউল ও সুমন বলেন, সুন্দরবনের দাসের ভারানি এলাকায় আগুন লাগার খবর পেয়ে তারা শতাধিক গ্রামবাসী সেখানে ছুটে গিয়েছেন। তারা বাড়ি থেকে কলসি, বালতি, জগ ও হাঁড়ি নিয়ে পাশের ভোলা নদী থেকে পানি নিয়ে আগুন লাগার স্থানে দিচ্ছেল।

আগুন যাতে বেশি ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য গ্রামবাসীর অন্য একটি দল ফায়ার লাইন [আগুনের অংশের মাটি আলাদা করা] কাটার কাজ করছে।

মরা ভোলা নদী থেকে আগুন লাগার স্থানের দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার; তাই পানি পেতে কষ্ট হচ্ছে। এখানে অন্য কোনো পানির উৎস নেই; যার কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। প্রায় দুই একর এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে তাদের ধারণা।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সকাল ১১টার দিকে দাসের ভারানি টহল ফাঁড়ির অদূরে ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখতে পায় বনকর্মীরা। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন কোথাও কোথাও ধোঁয়ার কুন্ডলি আবার কোথাও কোথাও আগুন জ্বলছে। এই বনে বলা, গেওয়া ও লতাগুল্ম জাতীয় গাছপালা রয়েছে।

“আগুনের খবর স্থানীয়দের জানানো হলে তারা আমাদের সাথে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছে। আগুনের বিস্তৃতি যাতে সব এলাকায় ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেজন্য স্থানীয়দের নিয়ে একদিকে পানি ছিটানো হচ্ছে অন্যদিকে ফায়ার লাইন কাটার কাজ চলছে।

“দমকল বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে তারা এখনও পৌঁছতে পারেনি। পানির যোগান কম থাকায় আগুন নেভানোর কাজে অসুবিধা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের ফেলে দেওয়া বিড়ি সিগারেটের আগুন থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কতটুকু এলাকায় আগুন ছড়িয়ে কী ধরনের গাছপালা পুড়ছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পরে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরুপণ করে জানানো হবে।