জেলার তাহিরপুর উপজেলার লামাশ্রম গ্রামের মধু মিয়া তাদেরই একজন। উপজেলার শনির হাওরে ধান কাটতে এসেছেন তিনি।
মধু মিয়া বলেন, তার বয়স ৫০ বছর। ৩০ বছর ধরে তিনি শনির হাওরে ধান কাটতে আসছেন। শনির হাওর তার বাড়ি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে। যার জমিতে ধান কাটে তার বাড়িতে অথবা হাওর পারের গ্রামে কোনো একটা কাছারি ঘরে থাকেন তারা।
সোমবার শনির হাওরে গিয়ে এই বাবা-ছেলেকে ধান কাটতে দেখা গেছে। তীব্র রোদ মাথায় অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে ধান কাটছেন তারা।
তিনি বলেন, “আমি ৪০ বছর ধরে ধান কাটি। আমার সঙ্গে ছেলে ফসিউল আলম ১০ বছর ধরে ধান কাটছে।”
তারা ভাগে ধান কাটেন। ধান কাটার দায়িত্ব তাদের। মাড়াই করার দায়িত্ব জমির মালিকের। মাড়াই শেষে সাত ভাগে এক ভাগ ধান পান কাটা শ্রমিকরা।
একই গ্রামের নূর আলম (৪৮) ছেলে নজরুল ইসলামকে নিয়ে ধান কাটতে এসেছেন। নজরুল এবারই প্রথম বলে জানান নূর আলম।
মধ্য তাহিরপুর গ্রামের কৃষক আয়ূব আলী (৫৫) বলেন, এ বছর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে তার জমির ধান কাটতে ১৮ জন শ্রমিক এসেছেন।
এক সময় পাবনা, সিরাজগঞ্জসহ উত্তরে বিভিন্ন জেলার অনেক শ্রমিক হাওরে ধান কাটতে আসতেন। এখন তাদের সংখ্যা কমে গেছে বলে তিনি জানান।
“অনেক শ্রমিককে বংশপরম্পরায় ধান কাটতে দেখেছি। ফলন ভাল হলে তারা অন্তত ছয় মাসের খোরাক সংগ্রহ করতে পারেন; যারা ধানের ভাগ নেন।”
অনেক শ্রমিক ভাগ না নিয়ে দৈনিক মজুরি হিসেবে টাকা নেন। এ বছর দৈনিক মজুরি কমবেশি পাঁচ শত টাকা বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
সুনামগঞ্জের হাওরে এ বছর ইতোমধ্যেই ৯০ শতাংশের বেশি জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুল হাসান।