‘ভারি বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যার শঙ্কায়’ ইউএনও এই আহ্বান জানানোর পর বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় অর্ধশত শিক্ষক কালাপুর ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের হাইল হাওরে ধান কাটায় অংশ নেন।
বেলা ১১টার দিকে সরজমিনে দেখা যায়, শ্রীমঙ্গল শহর ও শহরতলীর প্রায় অর্ধশত শিক্ষক মাথায় গামছা বেঁধে কাস্তে হাতে নিয়ে ধান কাটতে নেমে পড়েছেন।
ইউএনওর নেতৃত্বে অর্ধশত শিক্ষক ছাড়াও ধান কাটায় অংশ নেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেছার উদ্দীন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপ কুমার বর্ধন, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা অসীম কুমার কর প্রমুখ।
তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের ফেইসবুক পেইজে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) নজরুল ইসলাম ঘরে বসে থাকা মানুষকে স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকদের পাকা ধান কেটে দেওয়ার আহবান জানান। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার প্রখর রোদ উপেক্ষা করে কৃষকদের ধান কেটে দিচ্ছে।
“শিক্ষকরা তা করছেন বিপুল উৎসাহ নিয়ে এবং ধান কাটার গতিও সাধারণ কৃষকের ন্যায়। দুই ঘণ্টায় তারা কয়েক একর ধান কেটে দেন।”
শ্রীমঙ্গল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ দেব জীবন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, বর্তমানে তাদের স্কুল বন্ধ। শহর ও শহরতলীতে বসবাসকারী যেসকল শিক্ষকের নিজেদের কৃষিক্ষেত নেই তারা স্বউদ্যোগে সকালে ধান কাটতে আসেন। তারা প্রায় ৫০ জন শিক্ষক হাজীপুর এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষকের ধান কেটে দিয়েছেন।
“কৃষদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেদের খুব ভালো লাগছে। আগামীতেও আমরা এভাবে ধান কেটে দেব,” বলেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, এই মৌসুমে উপজেলার ৯ হাজার ৬৫২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাওর অঞ্চলের নিচু জায়গায় ৩ হাজার ৭২৭ হেক্টর জমি রয়েছে, যে জমিগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে ইতিমধ্যে হাওরের প্রায় ৪০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে।
“একজন কৃষকের ধান নষ্ট হয়ে যাওয়া মানে দেশের উৎপাদিত ধান নষ্ট হয়ে যাওয়া। তাই দেশের এ কৃষি সম্পদ রক্ষায় আমি কৃষি অফিসের সাথে আলোচনা করে ফেইসবুকে স্বেচ্ছায়শ্রমে ধান কেটে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছি। এতে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার এগিয়ে আসে।”
তিনি শুক্রবার শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নে ধান কেটে দেবেন বলেও জানান।